নওগাঁয় স্ত্রীকে বালিশচাপায় হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন

Looks like you've blocked notifications!
পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত নাসির উদ্দিন ওরফে নান্নু। ছবি : এনটিভি

পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে নাসির উদ্দিন ওরফে নান্নু নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেলে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক এ বি এম গোলাম রসুল এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় দণ্ডিত আসামি নাসির উদ্দিন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে নওগাঁ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন ওরফে নান্নুর সঙ্গে সরস্বতীপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে পারুল আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১১ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

এজাহারে বর্ণিত ঘটনার ১০ মাস আগে মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের ময়েন উদ্দিনের মেয়ে শারমিন আক্তারকে গোপনে বিয়ে করেন নাসির উদ্দিন। পরবর্তীতে পারুল আক্তার স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনা জানতে পারলে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হয় এবং ঘটনার জের ধরে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত। পাবিবারিক কলহের জের ধরে পারুল আক্তারকে মাঝেমধ্যে মারপিট করতেন নাসির উদ্দিন। ২০১৮ সালের ১২ জুন দিবাগত রাত ১০টা থেকে ১৩ জুন সকাল ৭টার মধ্যে কোনো এক সময় নাসির উদ্দিন তার স্ত্রী পারুল আক্তারকে ঘাড় মটকিয়ে ও বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে তাঁর স্ত্রী স্বাভাবিকভাবে মারা গেছেন বলে লোকজনকে জানিয়ে তড়িঘড়ি লাশ দাফনের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় নিহত পারুল আক্তারের মামা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মহাদেবপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে আসে পারুল আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আসামি নাসির উদ্দিন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর নাসির উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৪ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারী সরকারি কৌঁসুলি সঞ্জীব সরকার। আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এমরান হোসেন চৌধুরী।