নদীভাঙনে বিলীন হাজীপুর ইউনিয়ন, তবুও ইউপি নির্বাচন

Looks like you've blocked notifications!
ভোলার হাজীপুর ইউপির নির্বাচনের পোস্টারে ছেয়ে গেছে দৌলতখান পৌরসভাধীন দৌলতখান সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র।

ভোলার দৌলতখান উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন। কাগজে-কলমে ইউনিয়নটির অস্তিত্ব থাকলেও নদীভাঙনের কারণে নেই তার বাস্তবতা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এলাকাটি অনেক আগেই নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। মানুষের বসবাস না থাকার পাশাপাশি নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে, কিছু চর থাকলেও সেখানে রয়েছে গরু-মহিষের ঘর ও মাছের আড়ত।

এদিকে, মানুষের বসবাস না থাকলেও আগামী ১৫ জুন হতে যাচ্ছে এ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন। ইউনিয়নটিতে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় নির্বাচনে নয়টি ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র হচ্ছে পৌরসভার অধীনে থাকা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ শফিকুল হক বলেন, চরে যেহেতু বর্ষার সময় কোনো মানুষ থাকে না, সবাই মেইনল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে বা এলাকায় থাকে, এ ছাড়া যেহেতু চরে দুই-একটি মহিষের টিলা, মাছের আড়ত আছে, তাই সেখানে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্তরা যেহেতু ওই ইউনিয়নে থাকতে পারবে না, তাই আমরা এসব দেখে কমিশনের কাছে মেইনল্যান্ডে নির্বাচন করার অনুমতি চেয়েছি এবং কমিশন অনুমতি দিয়েছে। পৌরসভার একটি সরকারি বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ করা হবে।

দুটি মহিষের ঘর আর মাছের আড়ত নিয়ে একটি ইউনিয়ন কি না, জানতে চাইলে সৈয়দ শফিকুল হক বলেন, ‘এটা দেওয়া আছে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করেছে, তার প্রতিনিধি হিসেবে আমরা নির্বাচন করব। তারা বন্ধ করে দিলে করব না।’

মো. শরীফ নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘হাজীপুর ইউনিয়নটি মেঘনা নদীর মাঝখানে, যার কোনো অস্তিত্ব নেই, কোনো বসতি নেই। সে কারণে পৌরসভাসহ আশপাশের ইউনিয়নগুলোতে প্রার্থীরা পোস্টারিং করেছেন।’

একই কথা বলছেন নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. হামিদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনি প্রচারের জন্য বোরহানউদ্দিনের হাকিমউদ্দিন এলাকায় আছি। এরপর তজুমদ্দিন, লালমোহন হয়ে চরফ্যাশনের বেতুয়াতে যাব। ভোটারদের কাছে যাওয়ার জন্য সকালে বের হই, আর রাতে ফিরি। ভোটারেরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় বেশি কষ্ট হচ্ছে।

এদিকে, এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসব ঠিক করেছেন। আমাদের কাজ হলো নির্বাচন পরিচালনা করা। আমরা তাই করছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা করা দরকার, তাই করব।’

অপরদিকে, দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তারেক হাওলাদার বলেন, ‘২০১১ সালের আদমশুমারি বিবেচনায় নিয়ে জনসংখ্যা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন বিলুপ্ত বা নেই—এর কোনো অফিশিয়াল অর্ডার নেই। বিবিএস পরিসংখ্যান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একটি সংস্থা। তারা ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আমরা বিলুপ্ত বলতে পারি না। বিলুপ্ত হয়েছে এমন কোনো পত্র নেই। তাই, বিলুপ্ত বলতে পারি না। জেলা, সদর ও দৌলতখান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা সরেজমিন দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা পুরোপুরি তাদের বিষয়। আমরা প্রশাসন নিরাপত্তার বিষয়টি দেখব।’