নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন : ১৩ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড

Looks like you've blocked notifications!
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় করা মামলার আসামিরা। ছবি : এনটিভি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণচেষ্টা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্লীলতাহানির ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার আলোচিত ঘটনায় ১৩ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক জয়নাল আবেদীন আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। এ মামলার চার আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন এবং একজন এরই মধ্যে খালাস পেয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ লাবলু। বাদীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন এবং আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল।

এর আগে এ মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলু ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ আলী ওরফে আবু কালামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া উভয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ১৪ জনের নামে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। মোট ৪১ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন এবং ২৫ কার্যদিবসে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। গত বছরের ৪ অক্টোবর ১৪ জনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা করে পুলিশ। পরে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন নুর হোসেন বাদল, আব্দুর রহিম, আবুল কালাম, ইস্রাফিল হোসেন মিয়া, মাইন উদ্দিন সাজু, শামসুদ্দিন সুমন, আব্দুর রব চৌধুরী (পলাতক), মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ (পলাতক), জামাল উদ্দিন প্রবাসী জামাল (পলাতক), নুর হোসেন রাসেল, মিজানুর রহমান তারেক (পলাতক), আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও দেলোয়ার হোসেন দেলু।

এ মামলার বাদী ছিলেন ভুক্তভোগী নারী। মামলাটির তদন্ত করেন পিবিআই-এর পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী। এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পর্নোগ্রাফি আইনে আরেকটি মামলা চলামান রয়েছে।

২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা ওই নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাঁর নিজ ঘরে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নির্যাতন চালায়। পরে সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভুক্তভোগী নারী বাধ্য হয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এক পর্যায়ে ঘটনার ৩২ দিন পর ওই নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর পুলিশ আত্মগোপনে থাকা নারীকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয়। গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে আরও দুটি মামলাসহ এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী।