নাহিদ-মোরসালিন হত্যায় জড়িতেরা পুলিশের নজরদারিতে
রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় নাহিদ ও মুরসালিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় কয়েক জনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করেছে পুলিশ। এ ছাড়া যাঁরা অস্ত্র হাতে ছিলেন, তাঁদেরও শনাক্ত করেছে ডিবি পুলিশ।
বলা হচ্ছে—হামলাকারীদের সবাই ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য। তাঁরা পুলিশি নজরদারিতে রয়েছেন। ডিবির একাধিক সূত্র এনটিভি অনলাইনের কাছে জড়িতদের শনাক্ত ও তাঁদের নজরদারিতে রাখার দাবি করেছে।
গত মঙ্গলবার ঢাকা কলেজের ঠিক বিপরীতে নূরজাহান সুপার মার্কেটের খান ফ্যাশন স্টোরের সামনে ফুটপাতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন নাহিদ। সেখানেই তাঁর ওপর হামলা হয়।
হামলার একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিতে ও ভিডিওতে কালো হেলমেট ও ধূসর টি-শার্ট পরা এক যুবককে ধারাল অস্ত্র দিয়ে নাহিদকে আঘাত করতে দেখা গেছে। লাল টি-শার্ট ও হেলমেট পরা আরেকজন যুবক তাঁকে বাধা দিতে আসেন। এরপর তাঁরা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশে ফিরে যান।
হত্যা মামলার তদন্তকারী গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাহিদকে কোপানো যুবকের নাম জাকির। জাকির ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানান তাঁরা।
নাহিদকে প্রথম আঘাত করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী কাইয়ুম। তার পরনে সাদা ডোরাকাটা নীল টি-শার্ট ছিল বলে জানায় পুলিশ।
এ ছাড়া রাব্বী নামের রকজন নাহিদকে কুপিয়েছেন বলেও ডিবি সূত্রে জানা গেছে। তারপরও পরিচয় শতভাগ নিশ্চিত হতে কাজ করছে ডিবি পুলিশ।
তদন্তকারীদের তথ্য অনুসারে, গত মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত নিহত নাহিদ ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের পক্ষ হয়ে সংঘর্ষে জড়ান। একটি বড় ছাতা হাতে তাঁকে সংঘর্ষের একদম সামনে দেখা যায় অন্তত দুই ঘণ্টা ধরে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার এক পর্যায়ে ইটের আঘাতে আহত হয়ে সড়কে পড়ে যান নাহিদ। এরপর তাঁর ওপর নির্মম হামলা চালায় হেলমেটধারী কিছু যুবক।
নাহিদ হত্যার পরদিন হাসপাতালে মারা যান দোকানকর্মী মোরসালিন। মোরসালিনকে কুপিয়েছে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী।
ডিবিসূত্র বলছে, মোরসালিনের হত্যাকারীকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদেরকে নজরদারিতে রেখেছে তদন্তকারীরা। তবে, এ সম্পর্কে বিস্তারিত পরে জানাবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
হাফিজ আক্তার বলেন, ‘নাহিদ ও মোরসালিনের হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত অনেক দূর এগিয়েছে। আমরা কয়েক জনকে শনাক্ত করেছি। তাঁদের সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ঘটনার দিন যাঁরা অস্ত্র হাতে মহড়া করেছেন, তাঁদেরও আমরা শনাক্ত করেছি। বাকিটা পরে জানানো যাবে। দ্রুতই তাঁদের আমরা গ্রেপ্তার করব।’
গত সোমবার রাত ১২টায় শুরু হয় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ। আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষের পরদিন মঙ্গলবার দিনভর নিউ মার্কেট এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষের কারণে নিউ মার্কেটসহ আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। গতকাল বুধবারও বন্ধ ছিল মার্কেট। গতকাল দুপক্ষ ছিল মুখোমুখি অবস্থানে। ঢাকা কয়েজ এলাকায় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। তবে, সংঘর্ষে জড়ায়নি কোনো পক্ষই। অবশেষে আজ সকাল ১০টা থেকে নিউ মার্কেটসহ আশপাশের মার্কেটগুলো খুলতে শুরু করেছে।