ব্রয়লারের বাজার গরম

‘না পারি বলতে, না পারি সহ্য করতে’

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : এনটিভি

শরিফুল ইসলাম স্ত্রীর সঙ্গে বাজার সংক্রান্ত ব্যাপারে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে তিনি স্ত্রীকে বলেন, ‘আজ মুরগি ও ডিম বাদ। শুধু সবজি নিয়ে আসি? পারলে মাছ নিয়ে আসব।’

ফোনের ওপার থেকে শরিফুলের স্ত্রী কী বলেছিলেন তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে, মুঠোফোনে কথা শেষ করে শরিফুল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এখন বাজারে গিয়ে কিছু কিনতে গেলেই মেজাজ খারাপ হয়। না পারি সহ্য করতে, না পারি কিছু বলতে।’

আজ শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজারের ফারুক চিকেন ব্রয়লার হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে শরিফুল তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেখানে দাঁড়িয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গেও কথা হয় তার।

স্ত্রী লাবনী শরিফুলকে আজ মুরগি কিনে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু, দোকানে গিয়ে শরিফুলের যেন শরীর জ্বলে উঠল। শরিফুলের দাবি, আজ থেকে ১৫ দিন আগে তিনি ব্রয়লার মুরগি কিনেছিলেন ১৫০ টাকা কেজি দরে। আজ সেই মুরগি ২৪০ টাকা! অর্থাৎ ১৫ দিনের ব্যবধানে ৯০ টাকা বেড়েছে মুরগির দাম।

শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সঙ্গে ডিমের দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহে এখান (কারওরয়ান বাজার) থেকে ডিম কিনেছি ১৩৫ টাকা ডজন। আজ ১৪০ টাকা। তরিতরকার রান্না করতে গেলে মরিচ লাগে। সপ্তাহের ব্যবধানে মরিচের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ টাকা। অসহ্য! এভাবে সংসার চালাব কীভাবে? এক টাকা বেতন বাড়ে না। এখন তো দেখছি গ্রামে চলে যাওয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না।’

ফারুক চিকেন ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা মইনুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগির দাম এতো বেশি কয়েক বছরের মধ্যে বাড়েনি। গত ১৫ দিন ধরে প্রতিদিনই মুরগির দাম বাড়ছে। বিয়ষটা এমন, আজ যে দামে বিক্রি করছি, কাল আরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ১৫ দিন আগে ব্রয়লার বিক্রি করছি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। আজ বিক্রি করছি ২৪০ টাকা। ১৫ দিনে ১০০ টাকা বেড়েছে! ১৫ দিন আগে সোনালী মুরগি বিক্রি করেছি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা। আজ বিক্রি করছি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা। সকাল থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত মাত্র ১৭ কেজি মুরগি বিক্রি করছি আজ। কারওয়ান বাজারে এমন বিক্রি, ভাবা যায়? দামের কারণে মানুষ কিনতে আসে কম।’

মিজানুর রহমান একজন ভ্রাম্যমাণ সোনালি মুরগি বিক্রেতা। কারওয়ান বাজারের লোহা পট্টির দিকের রাস্তায় বসে তিনি হালি হালি মুরগি বিক্রি করছিলেন। এক হালি ২ কেজির বেশি ওজন হবে বলে তার দাবি। তিনি ক্রেতার উদ্দেশ্যে চিল্লিয়ে বলছিলেন, ‘রোস্টের মুরগি সকালে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা হালি বিক্রি করছি। এখন মাত্র ৫৮০ টাকা। দেইখা লন, বাইচ্ছা লন। শেষ হয়ে গেল।’

হামেস উদ্দিন একজন ডিম বিক্রেতা। তিনি বলেন, ‘পল্ট্রির ডিমের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ টাকা বেড়ে আজ বিক্রি করছি ডজন ১৪০ টাকা। তবে, হাঁসের ডিমের দাম ডজনে ৫ টাকা কমেছে। এখন বিক্রি করছি ২০৫ টাকা। কোয়েলের ডিমের দাম ডজন ৫০ টাকা করে বিক্রি করছি।’