নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চকও খুলছে না

Looks like you've blocked notifications!

পবিত্র মাহে রমজান চলছে৷ সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। অথচ, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আতঙ্কে সবকিছু থমকে গেছে। ঈদুল ফিতরের আগে রাজধানীর মধ্যবিত্তদের কেনাকাটার ভরসাস্থল রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া ও চাঁদনি চক না খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দোকান ব্যবসায়ীরা। যদিও গত ১০ মে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সীমিত আকারে দোকান খোলা রাখার।

এর আগে রাজধানীর প্রধান বিপণিবিতানগুলো যেমন- বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে, যমুনা ফিউচার পার্কসহ মিরপুরের বেশ কয়েকটি বড় জামা-কাপড়ের দোকান না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যবসায়ীরা।

আজ শনিবার দুপুরে নিউমার্কেট, গাউছিয়া ও চাঁদনি চক মার্কেট দোকান সমিতির ব্যবসায়ীরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন চাঁদনী চক ব্যবসায়ী ফোরামের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন।

মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ১১টি নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মার্কেট খোলা না রাখার। মার্কেট খোলা রাখলে করোনা আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমরাও যে আক্রন্ত হব না, বিষয়টি তো তা নয়। আমরা আশপাশের মোট ১১টি দোকানের মালিকরা বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাদনী চক, চিশতিয়া মার্কেট, ধানমণ্ডি হকার মার্কেট ও ইস্টার্ন মল্লিকাসহ আরো কয়েকটি মার্কেট বন্ধ রাখা হবে।'

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স ম কাইয়ুম বলেন, ‘নিউমার্কেট, গাউছিয়া ও চাঁদনী চক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা আমাকে জানিয়েছেন দোকান মালিকারা। এটা অবশ্য ভালো সিদ্ধান্ত মনে হয়েছে। এ ছাড়া আমাদের সিদ্ধান্ত আছে, এসব এলাকায় ফুটপাতেও আমরা কোনো দোকানপাট বসতে দেবো না। এখনো পর্যন্ত ডিএমপি থেকে আমাদের তেমন নির্দেশনা আছে।’

সরকারের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত

এর আগে গত ৪ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দোকান ও শপিংমল আগামী ১০ মে থেকে খোলার কথা জানায়। তবে তা বিকেল ৪টার মধ্যে বন্ধ করার কথা বলা হয়।

এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ রোগের বিস্তাররোধ এবং পরিস্থিতির উন্নয়নের লক্ষ্যে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার আগামী ৭ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি/জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা/সীমিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে শর্তাদি বিবেচনা করে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট, শপিংমলসহ অন্যান্য কার্যাবলি ১০ মে থেকে সীমিত আকারে খুলে দেওয়ার ব্যবস্থার অনুরোধ জানানো হলো। তবে এ ক্ষেত্রে আন্তজেলা ও আন্তউপজেলা যোগাযোগ/চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

বসুন্ধরা ও যমুনা বন্ধ

সরকারি আদেশের পর ৬ মে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল হিসেবে পরিচিত যমুনা ফিউচার পার্ক ও বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স রমজানের তাদের মার্কেট না খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

ওইদিন বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (অ্যাকাউন্ট) শেখ আব্দুল আলিম ও যমুনা ফিউচার পার্কের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চট্টগ্রামেও বন্ধ থাকবে সব শপিং সেন্টার  

ঈদের আগে চট্টগ্রামের বড় ছোট সব শপিং মল বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের পুলিশ লাইন সিএমপির কার্যালয়ে প্রশাসনের সঙ্গে এক সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রামের প্রায় ৬৮টি মার্কেটের প্রতিনিধিরা একসঙ্গে বসে ঈদের আগে সব মার্কেট ও দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বন্ধ থাকবে চট্টগ্রামের বড় শপিং মল বিপণিবিতান (নিউমার্কেট), মিমি সুপার মার্কেট, স্যানমার ওশান সিটি, সেন্ট্রাল প্লাজা, ফিনলে স্কয়ার, আমিন সেন্টার, লাকি প্লাজা, আফমি প্লাজা, রেয়াজ উদ্দীন বাজার তামাকুমন্ডি লেইন, আখতারুজ্জামান সেন্টার, টেরী বাজার, তামাকুমন্ডি লেইন, শপিং কমপ্লেক্স, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট, বৃহত্তর বায়েজিদ এলাকা ব্যবসায়ী সমিতি।

সিলেটের শপিংমল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ

ঈদের আগে খুলবে না সিলেটের কোনো শপিং মল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। গতকাল শুক্রবার দুপুরে সিলেট সিটি করপোরেশনে ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ব্যবসায়ী নেতা জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ১০ মে থেকে সিলেটের কোনো শপিংমল, মার্কেট ও ফ্যাশন হাউস না খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঈদের আগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না খোলার ব্যাপারেও সবাই একমত হন।