নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে সবজি, ঊর্ধ্বমুখী ডিমের দাম

Looks like you've blocked notifications!

বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে রাজধানীতে বেড়ে গেছে সবজির দাম। সবজির বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় কদর বেড়েছে ডিমের। চলতি সপ্তাহে বেড়ে গেছে ডিমের দাম। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জন্য বাজার দিন দিন আরো কষ্টের হয়ে উঠছে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন ও করলা—এই চারটি সবজির কেজি একশ টাকা ছুঁয়েছে। বাকি সবজিগুলোর বেশির ভাগ একশ ছুঁইছুঁই। বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো। বাজার ও মানভেদে পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। এর পরই রয়েছে গাজর। মানভেদে গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা। করলা (ছোট) বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। তবে বড় করলা ৭০ টাকা কেজিতেও পাওয়া যাচ্ছে।

সবজির এমন চড়া দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে বন্যা এবং ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সারা দেশে সবজির উৎপাদন কমে গেছে, যার প্রভাব সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। আর টমেটো ও গাজরের এখন মৌসুম না। এ কারণে এই দুই সবজির দাম সবচেয়ে বেশি।

দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী এলাকার ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া বলেন, বন্যা ও বৃষ্টিতে সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। যে কারণে অন্যান্য সবজির দামও কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া। তা ছাড়া মৌসুম না হওয়ার কারণে টমেটো ও গাজরের দাম বেশি।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও মানভেদে প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকায়। পাশাপাশি চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুরলতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পটোল ও ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কচুরমুখি ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া ধুন্দুল ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঝিঙে। লাউয়ের পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চাল কুমড়োর জালির পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও কাঁচামরিচ। এক কেজি আলুর দাম জন্য ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা। আর কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী শফিক জানান, বন্যা ও বৃষ্টির পানি সারা দেশের সবজি ক্ষেত নষ্ট করে দিয়েছে। অনেক সবজির গাছ পানিতে পচে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কাঁচামরিচের ক্ষেতের। অর্ধেকের বেশি মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণেই সবজি ও মরিচের দাম চড়া।

সবজির এই চড়া দামের মধ্যে নতুন করে দাম বেড়েছে ডিমের। বাজারভেদে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১০০ থেকে ১০৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছিল।

যাত্রাবাড়ী তুষারধারা এলাকার ডিম ব্যবসায়ী সোহেল আহমেদ বলেন, ঈদের আগে থেকে ডিমের ডজন ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। গত সপ্তাহেও ১০৫ টাকা ডজন বিক্রি করেছি। কিন্তু দুদিন ধরে ডিম বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যে কারণে এখন ডজন ১১৫ টাকা বিক্রি করছি।

এদিকে, সবজির চড়া দামের মধ্যে কিছুটা কমে পাওয়া যাচ্ছে ব্রয়লার মুরগি ও ইলিশ মাছ। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে এক কেজির ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। ৭৫০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। আর আধা কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে।