নেত্রকোনায় নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি, ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টায় কৃষক

Looks like you've blocked notifications!
নেত্রকোনায় নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টায় হাওরাঞ্চলের কৃষক। ছবি : এনটিভি

নেত্রকোনার বিভিন্ন নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো সময় ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে যাতে পারে বলে ফসলহানির আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষক। আর, এজন্য হাওরাঞ্চলের কৃষক দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার প্রধান প্রধান নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ধনু নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে হাওরের ফসলের যাতে কোনো ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি না হয়, সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসী সর্তক অবস্থায় বিভিন্ন বাঁধে অবস্থান করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এফ এম মোবারক আলী জানান, এ বছর নেত্রকোনা জেলায় এক লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩ মেট্রিকটন। খালিয়াজুরী, মদন ও মোহনগঞ্জ—এ তিন হাওর উপজেলায় ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে বাঁধ ভেঙে হাওরের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এমন আশঙ্কায় সরকার ৮০ ভাগ ধান পাকলেই হাওরের কৃষকদের ধান কাটার নির্দেশ দিয়েছে। এ জন্য জেলা কৃষি বিভাগও কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছে।

এফ এম মোবারক আলী আরও জানান, হাওরাঞ্চলের তিন উপজেলায় দ্রুত ধান কাটার জন্য ৩৭৭টি হারভেস্টার মেশিন ও প্রায় ১০ হাজার কৃষক দিন রাত ধান কাটায় ব্যস্ত রয়েছে। আজ রোববার পর্যন্ত হাওরের প্রায় ৬০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।

খালিয়াজুরী সদরের কৃষক সুলতান মিয়া বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বিআর-২৮ ধান কাটা শেষ হয়েছে। এখন চলছে হাইব্রিড ধান কাটা, যা কয়েক দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।’

গত সপ্তাহে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধনু নদীর পানিবৃদ্ধির কারণে খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলায় ৫০০ হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়। এ সময় খালিয়াজুরী উপজেলার কীর্তনখোলা বাঁধের কয়েকটি অংশে ফাটল দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাঁধ মেরামত করা হয়।