নেত্রকোনায় মা ও নবজাতকের মৃত্যু, পশু চিকিৎসক গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
নেত্রকোনার বারহাট্টা থানা। ছবি : সংগৃহীত

নেত্রকোনার বারহাট্টায় এক হাতুড়ে পশু চিকিৎসক দিয়ে সন্তান প্রসব করানোর সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মা ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পশু চিকিৎসক আবুল কাশেমকে বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মৃত শরিফার স্বামী মহসিন মিয়া আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মারা যাওয়া কলেজ শিক্ষার্থী প্রসূতি শরীফা আক্তার (১৯)। তিনি ওই গ্রামের হাইছ উদ্দিনের মেয়ে ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর এলাকায় মহসিন মিয়ার স্ত্রী। বৃহস্পতিবার শরীফা ও তাঁর নবজাতকের দাফন সম্পন্ন হয়। গত বুধবার বিকেলে চন্দ্রপুর দক্ষিণপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বছরখানেক আগে মহসিন মিয়ার সঙ্গে শরীফার বিয়ে হয়। সন্তান প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে গত সপ্তাহে স্বামীর বাড়ি থেকে তাঁকে চন্দ্রপুর বাবার বাড়িতে আনা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে শরীফার প্রসব ব্যথা শুরু হয়। এ সময় স্থানীয় পশুচিকিৎসক আবুল কাশেমকে বাড়িতে ডেকে আনা হয়। তিনি পশুর চিকিৎসার পাশাপাশি মানুষের চিকিৎসাও করেন। আবুল কাশেম শরীফার সন্তান প্রসব করানোর পর ছেলে নবজাতকটি কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যায়। একই সঙ্গে প্রসবপরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শরীফারও মৃত্যু হয়।

মহসিন মিয়া বলেন, ‘বুধবার সকালে প্রসব ব্যথা শুরু হলে কাশেম ডাক্তারকে খবর দেওয়া হয়। তিনি শরিফার শরীরে ইনজেকশন ও স্যালাইন পুশ করেন এবং তলপেটের নিচে অস্ত্রোপচার করেন।’

মহসিন মিয়ার অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের ব্যাপারে ওই হাতুড়ে চিকিৎসকের প্রস্তুতি ছিল না। পরে ওষুধ আনতে দেরি হওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শরিফা মারা যায়।

বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুল হক বলেন, মৃতের স্বামী মহসিন মিয়ার মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুস্তাফিজুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মাজহারুল ইসলাম।

জেলা প্রশাসক কাজি আবদুর রহমান বলেন, ‘তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে মৃত শরিফার স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের গাফিলতি ও অজ্ঞতা এবং পল্লী চিকিৎসক আবুল কাশেমের অজ্ঞতার কারণেই প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।’