নোয়াখালীর গৃহবধূ নির্যাতনে পুলিশের গাফিলতি ছিল
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি ছিল বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
এ সময় আদালত বলেন, দৃষ্টান্তমূলক সাজা না হওয়ায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ করে ভিডিওধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে।
মামলার শুনানিকালে আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
শুনানিতে আদালত বলেন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ীদের বিরুদ্ধে সাজা দেওয়ার হার কম। ধর্ষণ ও নির্যাতন করে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হলে নির্যাতনের শিকার নারী এবং তাদের পরিবারে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনিক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। পরে আদালত শুনানি মুলতবি করেন।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জে ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার ৩২ দিন পর ৪ অক্টোবর দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই দুটি মামলা হয়। এ বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।
৫ অক্টোবর নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এবং চৌমুহনী সরকারি এসএ কলেজের অধ্যক্ষকে ওই ঘটনা সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে বলা হয়। অনুসন্ধান শেষে ১৫ কার্যদিবসের হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ অক্টোবর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়।
পরে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ওই নারীর স্বামীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। একইসঙ্গে ওই নির্যাতনের ঘটনায় হামলাকারীদের সঙ্গে নারীর ভাসুরেরও সম্পৃক্ততা পায় কমিটি।
এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হলে ঘটনার হোতা দোলোয়ার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পরদিন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ তাকে আটক করে র্যাব। ৬ অক্টোবর দেলোয়ারের মাছের ঘের থেকে হাতবোমা উদ্ধার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে র্যাব দুটি মামলা করে।