নড়াইলের বড়দিয়া মঠে পাঁচ দিনব্যাপী দোলযাত্রা অনুষ্ঠান

Looks like you've blocked notifications!
নড়াইলের বড়দিয়া শ্রীশ্রী গৌর সারস্বত গৌড়ীয় মঠে গৌরাবির্ভাব তিথি ও শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা উপলক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানে ভক্তদের ভিড়। ছবি : এনটিভি

খরস্রোতা মধুমতি-নবগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা বড়দিয়া নৌবন্দর। বাণিজ্য করতে এসে এক সময় দাপিয়ে বেড়িয়েছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বড় বড় জাহাজ। আজ স্মৃতিময় বন্দর ছাড়া কিছুই নেই। তবে সেখানে গড়ে উঠেছে শ্রীশ্রী গৌর সারস্বত গৌড়ীয় মঠ। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মঠে ৫৩৬তম শ্রীশ্রী গৌরাবির্ভাব তিথি ও শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা উপলক্ষে আয়োজন করা হয় পাঁচ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে মঙ্গলাধিবাস, আলোচনা সভা, নগরকীর্তন ও শোভাযাত্রা, নবগঙ্গায় পূণ্যস্নান, হোলিখেলা, পদাবলী কীর্তন, গীতা প্রতিযোগিতা, ধর্মীয় সংগীত প্রতিযোগিতা, নামযজ্ঞ ও মহাপ্রসাদ বিতরণ।

অনুষ্ঠান উপলক্ষে আলোকসজ্জাসহ নানা রংয়ে সাজানো হয়েছে গৌড়ীয় মঠের স্থাপনাকে। শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্তদের আগমনে মঠ চত্বর মুখরিত হয়ে ওঠে। হোলি খেলায় মত্ত হয়। একে অপরের মুখে নানা রঙের আবির মাখিয়ে শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ কামনা করেন। ভক্তরা নেচে গেয়ে জন্মাষ্টমী উদযাপন করেন।

খুলনার সরকারি মহিলা কলেজে এমএ পড়ুয়া তিথি দাশ জানান, বাড়ি বড়দিয়ার পাটনা গ্রামে হলেও তিনি এই দিনটার অপেক্ষায় থাকেন। তাই ছুটে এসেছেন এলাকায়। তিথি দাশ আরও বলেন, ‘শ্রীকৃষ্ণের দর্শন পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। এলাকার বন্ধু-বান্ধব, স্বজনদের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করতে চলে আসি। আমাদের এলাকায় এমন একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে কল্পনাও করতে পারিনি।’

নড়াইলের বড়দিয়া শ্রীশ্রী গৌর সারস্বত গৌড়ীয় মঠে গৌরাবির্ভাব তিথি ও শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা উপলক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। ছবি : এনটিভি

ভারতের বৃন্দাবন থেকে আসা অংশুমান বন্দ্যোপ্যাধ্যায় বলেন, ‘নদীর তীরে গৌড়ীয় মঠ দেখে মনটাই ভালো হয়ে গেল। কত আয়োজন। সুশৃঙ্খলভাবে সবাই যে যার কাজ করে চলেছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নানা আয়োজন। সাধু সাধু।’

মঠের মহারাজ বলেন, ১৯৪৩ সালে স্থাপিত হয় বড়দিয়া গৌড়ীয় মঠ। মঠের প্রতিষ্ঠাতা বড়দিয়া টোনা গ্রামের প্রভুপাদ শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর মহারাজ। কোন সরকারি অনুদান ছাড়াই ভক্তদের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মঠ। মঠ গড়তে চার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।

মঠাচার্য স্বামী ভক্তিস্বরূপ সজ্জন মহারাজ বলেন, এই মঠ মূলত ধর্ম প্রচারকেন্দ্র। প্রাণের এই প্রতিষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আলোকিত মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে শিক্ষা-দীক্ষা দেওয়া হয়। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী এই প্রতিষ্ঠান ভক্তদের সার্বিক সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে। এখানকার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষও অত্যন্ত সহনশীল এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী।