নড়াইলে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা : প্রধান অভিযুক্ত খুলনা থেকে গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
রহমতুল্লাহ বিশ্বাস রনি। ছবি : সংগৃহীত

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইলের কলেজশিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় অন্যতম আসামি রহমতুল্লাহ বিশ্বাস রনিকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে খুলনার ছোট বয়রা এলাকা থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করে নড়াইল জেলা পুলিশ।

শিক্ষককে লাঞ্ছনার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজ দেখে মোট চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নড়াইল সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে গলায় জুতার মালা পরানোসহ শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পোড়ানো এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মুরসালিন বাদী হয়ে গত সোমবার (২৭ জুন) দুপুরে মামলা করেন। এ মামলায় ১৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর মধ্যে মির্জাপুর বাজারের মোবাইল ফোনের মেকার শাওন (২৮), অটোচালক রিমন (২২) এবং একই গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে (২৭) গত মঙ্গলবার দুপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায় গত ১৭ জুন রাতে তাঁর ফেসবুক আইডিতে ভারতের বিতর্কিত বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মাকে নিয়ে ইতিবাচক পোস্ট করেন। ১৮ জুন কলেজের অন্য শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে পোস্টটি মুছে ফেলার অনুরোধ করেন। রাহুল তাঁর পোস্টটি না মুছে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

শিক্ষার্থীরা বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জানান। একপর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের সব শিক্ষকদের পরামর্শে রাহুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে কলেজ চত্বরে থাকা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। ঘটনার সময় অন্তত ১০ জন ছাত্র-জনতা আহত হন।

এদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ এনে বিক্ষুদ্ধ জনতা ঘটনার দিন ১৮ জুন বিকেলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়কে গলায় জুতার মালা পরিয়ে প্রতিবাদ জানান। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন, এ ঘটনায় চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।