পরিবেশ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে : তথ্যমন্ত্রী
পরিবেশ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, রাজনীতিবিদের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষকে ভালো অভ্যাসগুলো জানানো এবং শেখানো। সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাই, আসুন যারা পরিবেশ ধ্বংস করে, প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করে, প্রকৃতিকে ধ্বংস করে তাদের বিরুদ্ধে আমরা যেন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াই।
আজ শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মানুষের টিকে থাকার জন্য এই পৃথিবী দরকার, কিন্তু পৃথিবীর টিকে থাকার জন্য মানুষের দরকার নাই। পৃথিবীতে বহু প্রাণী এসেছে, বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিন্তু পৃথিবী টিকে আছে। মানুষও যদি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে পৃথিবীর কিছু যায় আসে না। যেভাবে আমরা পরিবেশ প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি প্রকারান্তরে আমরা আমাদের অস্তিত্বকেই ধ্বংস করছি, এটিই হচ্ছে বাস্তব সত্য। পরিবেশ প্রকৃতিকে ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে মানুষ ক্রমাগতভাবে নিজের অস্তিত্বকেই ধ্বংসের মুখে দ্বার করাচ্ছে। সুতরাং আমাদের নিজের প্রয়োজনেই পরিবেশ-প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ঢাকা শহরের দুই কোটি মানুষ এবং চট্টগ্রাম শহরের প্রায় ৮০ লাখ মানুষ যদি মনে করে আমি যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলব, পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সেটি পরিষ্কার করবে। তাহলে সেই শহর কখনো পরিষ্কার রাখা সম্ভব হবে না। সেজন্য পরিবেশ বিজ্ঞানের একজন ছাত্র ও পরিবেশ কর্মী হিসেবে সবার প্রতি বিনীত নিবেদন জানাই, প্রত্যেকেই যেন তিনটি করে গাছ লাগাই। এটি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্লোগান। একই সঙ্গে নিজের প্রয়োজনে পরিবেশ-প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করি, তাহলেই মানুষ এই পৃথিবীতে টিকে থাকবে।
গত ১২ বছরে বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, যেখানে এক সময় বনাঞ্চলের পরিমাণ আট শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল, সেটি এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে একটি গাছের আর্থিক মূল্য অপরিসীম, সেখানে রাস্তার ধারের বনায়ন নষ্ট হয় না, জনগণই পাহাড়া দেয়। কারণ এই সামাজিক বনায়নের মালিকানা রাস্তার পাশের মানুষের আছে। এটিকে প্রবর্তন করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্ব এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করে নানা ধরনের সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করার কারণে এটি সম্ভবপর হয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্তমানে করোনাভাইরাসের বিষয়েও ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য মতবাদ হচ্ছে একটি বিশেষ প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। সব ধরনের প্রাণীকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করা, সব ধরনের প্রাণী খেয়ে ফেলা এটির কারণে আজকে আমরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছি। করোনা কিভাবে আজকে মানুষকে পর্যুদস্ত করেছে, সেটি সবাই অনুভব করছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক আবদুল আউয়াল সরকার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-প্রধান বার্তা সম্পাদক অনুপ কুমার খাস্তগীর। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্য্য সভায় সভাপতিত্ব করেন।
উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ, দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, বিটিভির অনুষ্ঠান প্রিভিউ কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন খাঁন স্বপন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. সেলিম, উত্তর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।