পর্যাপ্ত খাদ্যপণ্য মজুত থাকলে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে কেন : ড. মোশাররফ

Looks like you've blocked notifications!
ড. মোশাররফ হোসেন আজ সোমবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি

পর্যাপ্ত খাদ্যপণ্য মজুত থাকলে বাজারে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে কেন বলে প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এ বিষয়ে সরকারের কাছে স্পষ্ট জবাব দাবি করেন তিনি।

আজ সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ড. মোশাররফ।

গতকাল রোববার (১২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া রমজানের আগে দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত রয়েছে মর্মে আশ্বস্ত করে জনসাধারণকে আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গ টেনে ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘পত্রিকায় এসেছে—জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে। রমজান মাসে কীভাবে চলবে, তা ভেবে মানুষ দিশেহারা। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, দেশে নাকি নিত্যপণ্যের মজুত প্রচুর আছে। জনগণকে বলেছে, আতঙ্কিত হয়ে বেশি কেনাকাটা করবেন না। যদি এত মজুদ থাকে তাহলে কেনাকাটা করলে অসুবিধা কোথায়?’

বাজার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘চিনির দাম ১২০ টাকা, গরুর মাংস ৮০০ টাকা। গরু ও মুরগির মাংস ভাগ করে কেনাকাটা করার রেওয়াজ এই দেশে ছিল না। ইলিশ মাছ কেটে দুইশ, আড়াইশ গ্রাম করে কেনার রেওয়াজ ছিল না। আজকে কিন্তু বাজারে তা দেখা যাচ্ছে। তারপরেও যদি সরকার বলে—সবকিছু মজুত আছে, কী রকম চাপাবাজি করছে সরকার! বাজারে গিয়ে দেখেন, মানুষ সরকারকে কী পরিমাণ গালাগালি করে। আজকে গরিব মানুষ অর্ধাহারে আছে। এরপরও এই সরকার চাপাবাজি করছে। আমরা জানতে চাই—খাদ্যপণ্য যদি এতই মজুদ থাকে তাহলে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে কেন? সরকার সুস্পষ্ট জবাব দিক।’

ড. মোশাররফ বলেন, ‘এই দামবৃদ্ধির সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি। দেখেন মূল্যস্ফীতির অবস্থা। গত জানুয়াতিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৭, ফেব্রুয়িারিতে তা বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৭১। এরপর আরও বৃদ্ধি হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার।’

মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রী-নেতা-ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট জনগণের টাকা লুট করার কারণেই এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। সরকার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মেগাপ্রজেক্ট করে লুটপাট করছে, ব্যাংক লুট করছে। যাদেরকে ঋণ দিয়েছে তাদের কোনো পরিচয় নাই। তাদের লোক বলে ঋণ দিয়েছে। এই লুটপাটের কারণে অর্থনীতি এখন ধ্বংস।’

ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বিদ্যুতের দামও প্রতি মাসে বাড়ানো হচ্ছে। কীসের জন্য? ইনডেমনিটি দিয়ে সরকার বিদ্যুৎখাতের লুটেরাদের রক্ষা করেছে। সরকারের লোকদের টাকাপাচার ও দুর্নীতিকে ব্যাকআপ দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।’

এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘সরকার চাপাবাজি করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছে। কিন্তু এভাবে কোনো সরকার বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। জনগণ বুঝতে পেরেছে, এ সরকারকে সরানো ছাড়া দেশের ক্রান্তিকাল অতিক্রম করা সম্ভব নয়।’

‘মৃত্যুকুপে ধাবমান বাংলাদেশ’ নামে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল কুদ্দুস। এতে আরও বক্তব্য রাখেন যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জিয়া পরিষদের ডা. আবদুল কুদ্দুস, মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জিয়া পরিষদের আব্দুল্লাহিল মাসুদ, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, ড. আবু জাফর প্রমুখ।