পলাতক স্ত্রীর খোঁজ পেতে শিশু অপহরণ, অবশেষে ধরা

Looks like you've blocked notifications!
শিশু আঁখিকে অপহরণ করায় গতকাল সোমবার দুজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকার আশুলিয়ায় অপহরণের তিন মাস পর দেড় বছরের অপহৃত শিশু আঁখি আক্তারকে গাজীপুর থেকে উদ্ধার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৪)। গতকাল সোমবার রাতে শিশুটিকে উদ্ধারের সময় এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. রাশেদুল ইসলাম (৩০) ও রোকসানা (৩৫)।

র‍্যাবের দাবি—পরকীয়ায় পালিয়ে যাওয়া স্ত্রীর খোঁজ পেতে তাঁর স্ত্রীর পরিচিত মিরা আক্তারের মেয়ে আঁখিকে অপহরণ করেন রাশেদুল। পরে তাঁর ফুফুর কাছে রেখে দেন শিশু আঁখিকে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব দাবি করে, অপহরণকারী মো. রাশেদুল ইসলাম দুই বছর ধরে আশুলিয়া থানার জিরানী বাজার কলেজ রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। রাশেদুলের স্ত্রী নুরজাহান ও আঁখির মা মিরা আক্তার আশুলিয়ায় একই গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। এক পর্যায়ে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন রাশেদুলের স্ত্রী। পালিয়ে যান প্রেমিকের সঙ্গে। স্ত্রীর খোঁজ পেতে রাশেদ একাধিকবার আঁখির মা মিরা আক্তারকে জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু, অবস্থান জানতে না পেরে আঁখিকে অপহরণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৩১ মার্চ পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আঁখির বাবা মা কাজে চলে যান। ওদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাশেদুল বাসা ভাড়া নেওয়ার কৌশলে আঁখির নানির সঙ্গে কথা বলেন। একপর্যায়ে আঁখির বড় ভাই মিরাজকে (৫) ১০ টাকা দিয়ে চকলেট খাওয়ার জন্য মুদিদোকানে পাঠান। পরে অপহরণকারী ওই দোকানের পাশ থেকে সুযোগ বুঝে পরিকল্পিতভাবে আঁখিকে কোলে নিয়ে পালিয়ে যান।

মো. মোজাম্মেল হক বলেন, র‍্যাব-৪ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, অপহরণকারী রংপুর জেলায় আত্মগোপনে রয়েছে। পরে র‍্যাব-৪-এর একটি আভিযানিক দল র‍্যাব-১৩-এর সহযোগিতায় গতকাল সোমবার রাতে রংপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। এই অভিযানে গ্রেপ্তার হন অপহরণকারী রাশেদুল ইসলাম।

পরে জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণকারীর দেওয়া তথ্যমতে, গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকার একটি বাসা থেকে রোকসানার (৩৫) হেফাজত থেকে দেড় বছরের অপহৃত শিশু আঁখিকে উদ্ধার করা হয়। এসময় রোকসানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাশেদুলের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনার দিনই অপহৃত শিশু আঁখিকে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকায় তাঁর ফুফু রোকসানার কাছে যান। গিয়ে আঁখিকে নিজের মেয়ে পরিচয় দিয়ে রোকসানার কাছে কিছুদিন রাখতে অনুরোধ করেন এবং তিনি নিজে গ্রামের বাড়ি রংপুরে গিয়ে আত্মগোপনে চলে যান।

র‍্যাব বলছে—আসামি রোকসানার নিজের কোনো কন্যাসন্তান না থাকায় মায়ের আদরে শিশু আঁখিকে লালন-পালন করতে থাকেন। উদ্ধার হওয়ার আগপর্যন্ত শিশু আঁখি আসামি রাশেদের ফুফু রোকসানার হেফাজতে ছিল।