পলাশবাড়ীতে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তদন্ত কমিটি

Looks like you've blocked notifications!
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান মুকিত। ছবি : সংগৃহীত

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান মুকিতের পরিবারের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কেন্দ্রের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গত ২০ এপ্রিল এনটিভি অনলাইনে ‘পলাশবাড়ীতে আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

গাইবান্ধার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ সামস-উল আলম হীরু ও সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তদন্ত কমিটি করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান মুকিতের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সম্পর্কে কিছু আপত্তিকর বক্তব্য ও তাঁর বাবা মা জামায়াত ইসলামের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্যাসত্য নিরুপণের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুলতান আলী মণ্ডল এবং সদস্য হলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম কোর্ট, সাংগঠনিক সম্পাদক পিয়ারুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জরিদুল হক, দপ্তর সম্পাদক সাইফুল আলম সাকা।

আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের বরাবরে দাখিলের জন্য অনুরোধ করা হয় ওই চিঠিতে।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অনুমোদনে গত ১৩ মার্চ পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে সভাপতি পদে শামিকুল ইসলাম লিপন, সহ সভাপতি সাইফুল্লাহ রহমান চৌধুরী তোতা, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মণ্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান মুকিতের নাম ঘোষণা করা হয়।

কমিটি ঘোষণার পর পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম কেন্দ্রে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেন।

তাতে বলা হয়, মুকিত এর আগে পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এমনকি তার বাবা জামায়াতে ইসলামীর গাইবান্ধা জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত আমির ও পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। মুকিতের মা পলাশবাড়ী সরকারি কলেজের ১৯৯২-১৯৯৩ সালে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে ছাত্র শিবিরে ভোট প্রার্থনা করেছিলেন। পাশাপাশি নতুন কমিটির সহ সভাপতি সাইফুল্লাহ রহমান চৌধুরী তোতাসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার মুকিতকে সাংগঠনিকক সম্পাদক করায় প্রতিবাদ করেন।

এ পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের নির্দেশে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগ।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুলতান আলী মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান মুকিতের বিরুদ্ধে ‘জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের তদন্তের জন্য আমাকে প্রধান করে একটি কমিটি করেছে। আমরা ইতোমধ্যে সবাই বসেছি। আগামীকাল পলাশবাড়ী এলাকায় যাব। পুরোনো আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলব। আশা করি তদন্ত রিপোর্টে প্রকৃত ঘটনা আমরা তুলে ধরতে পারব। যদিও ঈদের কারণে আমরা একটু বেশি সময়ের জন্য আবেদন করবো। এই সমস্ত ঘটনা উদঘাটন করা আসলেই জরুরি।  

কেন্দ্রে অভিযোগ দেওয়ায় হুমকি : থানায় ডায়েরি

পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান মুকিতের বিরুদ্ধে ‘জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ কেন্দ্রে জমা দেওয়ার পর থেকে নানাভাবে হত্যার হুমকি পাওয়ায় পলাশবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম।

মো. আমিনুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক, আমি উনার কাছে এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে আমাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তার বন্ধুবান্ধব, আশপাশের লোকজন দিয়ে সরাসরি রাস্তাঘাট, বাজার, দোকানপাটে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। তার অনুসারী কিছু লোক সরাসরি আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে। এই মর্মে আমি পলাশবাড়ী থানায় জিডি করেছি।