পাবনায় পশুর হাটে উপচেপড়া ভিড়, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি
পাবনার একাধিক উপজেলায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বসানো হচ্ছে পশুর হাট। এতে করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এসব হাট থেকে করোনার উচ্চ সংক্রমণ সৃষ্টি করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ সাঁথিয়া উপজেলার করমজা পশুর হাটে ছিল উপচেপড়া ভিড়। হাট কমিটির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা খুব একটা কাজে আসতে দেখা যায়নি।
হাট কমিটি জানায়, হাটে পশুর প্রচুর আমদানি হয়েছে। তবে এটি স্বাভাবিকের চেয়ে এক-চতুর্থাংশ কম। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে যানবাহন বন্ধ থাকায় দূর থেকে হাটে পশু কম এসেছে। এসব কারণে হাটে পশুর আমদানি কম বলে জানায় হাট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে হাটে আসা খামারিরা জানান, হাটে কোরবানির প্রচুর পশু উঠলেও ক্রেতা ছিল বেশ কম। ফলে এর আগের হাটগুলোর চেয়ে মঙ্গলবার পশুর দামও ছিল কিছুটা কম। হাটের গরু ব্যবসায়ীরা জানান, হাটে গরুর দাম অন্য হাটগুলোর চেয়ে ১০ থেকে ২০ শতাংশ কম ছিল।
হাটে গরু নিয়ে আসা সাঁথিয়া উপজেলার সোনাতলা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘একবছর ধইর্যা দুইটা গরু পালতেছি। আশা করিছিলাম, গরু দুইটার দাম কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকা হবি। কিন্তু এর দাম উঠিছে মাত্র এক লাখ আশি হাজার টাকা।’
হাটে স্বাস্থ্যবিধি তো দূরের কথা; ক্রেতা-বিক্রেতাকে গাদাগাদি করে একে-অপরকে ঘেঁষে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। অনেকেই মুখে মাস্ক পরেনি। যারা পরেছে, তাদের অনেকের মাস্ক ছিল নাকের নিচে।
বেড়া উপজেলার পেঁচাকোলা গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, ‘মাস্ক পইর্যা হাটে আইছিল্যাম। কিন্তু গরমে মুখে মাস্ক রাখা যায় না। তাই পকেটে রাখিছি।’
হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি মিজানুর রহমান উকিল বলেন, ‘গরুর হাট বিধিনিষেধের বাইরে। তাই আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের হাটে আজ আমরা প্রায় সাত হাজার মাস্ক বিনা পয়সায় বিতরণ করেছি। এ ছাড়া স্যানিটাইজার ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাঁথিয়া ও বেড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা করমজা পশুর হাট পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁরা হাটে স্বাস্থ্যবিধি পালন করা হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে তদারকি করেন।
সাঁথিয়ার ইউএনও এস এম জামাল আহমেদ বলেন, ‘চলমান বিধিনিষেধ অনুযায়ী অস্থায়ী হাট বসায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নিয়মিত হাটগুলোর ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট পরিচালনা করার জন্য করমজা হাট কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছি।’
পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সব ইউএনওকে নির্দেশনা দিয়েছি। সাঁথিয়া উপজেলার করমজা হাট বসানোর বিষয়ে খোঁজ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’