পিকে হালদারের বান্ধবী রুনাকে জামিন বিষয়ে হাইকোর্টের রুল

Looks like you've blocked notifications!
হাইকোর্ট। ছবি : সংগৃহীত

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের বান্ধবী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট নাহিদা রুনাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

নাহিদা রুনার জামিন আবেদন সংক্রান্ত আবেদনের শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিন আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। আর আসামি নাহিদ রুনার জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল আলিম মিয়া জুয়েল।

এ মামলায় বিচারিক আদালতে জামিন নামঞ্জুর হলে গত ২৫ এপ্রিল জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন নাহিদা রুনা।

আজ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য উঠলে আদালত এ রুল জারির আদেশ দেন।

গত ১৩ জুন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুনার পক্ষে করা সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে ‘নট টুডে’ মর্মে জামিন আবেদনের শুনানি পিছিয়ে আদেশ দেন।

এর আগে গত ৯ মে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে নাহিদা রুনার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। গত বছরের ১৬ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে নাহিদা রুনাকে গ্রেপ্তার করে দুদক।

দুদক অবৈধ ক্যাসিনো মালিকদের সম্পদের তদন্ত শুরু করলে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি দুদক প্রায় ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর গত বছরের ২ ডিসেম্বর আদালত পি কে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

কানাডায় অবস্থানকারী পি কে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা, ফার্স্ট ফাইন্যান্স থেকে দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং থেকে তিন হাজার কোটি টাকা ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

পি কে হালদারের অর্থপাচারের বিষয়গুলো দেখভাল করতেন নাহিদা। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারের ওপর মহলকে ম্যানেজ করতেন তিনি। আর এসব কাজের পুরস্কার হিসেবে নাহিদাকে শূন্য থেকে কোটিপতি বানান পি কে হালদার।

দুদক কর্মকর্তারা জানান, পি কের টাকা পাচারের অন্যতম সহযোগী এই নাহিদা রুনা। কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কত টাকা আত্মসাৎ ও পাচার হচ্ছে সেই হিসাব রাখতেন রুনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন মহলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করতে রুনাইয়ের দক্ষতা অপরিসীম। তিনি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করতে সিদ্ধহস্ত।

দুদকের অনুসন্ধান দলের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পি কে হালদারের দখলে থাকা ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটিজের ১০০ কোটি টাকা নিজের মতো করে খরচ করার সুযোগ পান রুনা। এ ছাড়া পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানিতে (বিআইএফসি) রুনার প্রভাব ছিল উল্লেখ করার মতো।’