‘পুলিশকে সায়েস্তা করতে’ ছাত্রলীগনেতার কালীমূর্তি ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ৩

Looks like you've blocked notifications!
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কালীমূর্তি ভাঙার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা আসাদুজ্জামান হিরোর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সূত্রে গ্রেপ্তার হওয়া তুষার ও সাজ্জাদ হোসেন। ছবি : এনটিভি

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ‘পুলিশকে সায়েস্তা করতে’ কালীমূর্তি ভেঙেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্যবিলুপ্ত কমিটির সভাপতি দিনার হোসেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমান।

পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগনেতা দিনারকে ধরতে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে। তিনি শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও ৮নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন আসাদুজ্জামান হিরো, তুষার হোসেন ও সাজ্জাদ হোসেন। এদের মধ্যে আসাদুজ্জামান হিরো আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ সুপার আরও জানান, শৈলকুপা উপজেলার ৮নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ডাউটিয়া গ্রামে ১০০ বছরের পুরোনো কালীমন্দির। এ মন্দিরে গত ৬ অক্টোবর গভীর রাতে কালীপ্রতিমার মাথা ভেঙে মন্দির থেকে ১৫০-২০০ গজ দূরে গ্রামের রাস্তায় ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এর আগে দরজা ভেঙে মন্দিরে প্রবেশ করে তারা। এ খবর জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। ওই এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

এ ঘটনায় মন্দির কমিটির সভাপতি সুকুমার মণ্ডল বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় পরের দিন (৭ অক্টোবর) একটি মামলা করেন। ফলে জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলসহ বিভিন্ন ইউনিট তৎপর হয়ে ওঠে। ঘটনার ছয় দিন পর (১২ অক্টোবর) উপজেলার কুশবাড়িয়া এলাকার আসাদুজ্জামান হিরোকে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় আটক করা হয়।

পুলিশ সুপার জানান, আটক হিরোকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি (হিরো) গতকাল শনিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে ঘটনার মূল হোতা উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্যবিলুপ্ত কমিটির সভাপতি দিনার হোসেনসহ জড়িত কয়েকজনের নাম বেরিয়ে আসে। রাতেই সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে উপজেলার কুশবাড়ীয়া গ্রামের তুষার হোসেন ও সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, গত ৬ অক্টোবর ৮নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের লাঙ্গলবাঁধ এলাকায় গড়াই নদীতে দুটি ট্রলারে ১৫-১৬ জন নারী নিয়ে অশ্লীল নাচ-গান ও জুয়াখেলার আয়োজন করে দিনার হোসেন ও তার সহযোগীরা। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলার সরঞ্জামাদি, সাউন্ডবক্স ও রান্না করা খাবারসহ দুটি ট্রলার জব্দ করে। এতে তাদের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়। ফলে ক্ষিপ্ত হয় তারা।

পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান দাবি করেন, পুলিশি অভিযানে ক্ষিপ্ত হয়ে দিনার হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা গোপনে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে পুলিশকে সায়েস্তা করার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী মন্দিরের কালীমূর্তি ভেঙে রাস্তার মোড়ে ফেলে রেখে যায় তারা।