প্রণোদনার চাল বিক্রির অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে
মাদারীপুরের কালকিনিতে জেলেদের জন্য সরকারের খাদ্য সহায়তার চাল আত্মসাৎ ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সংরক্ষিত নারী সদস্যের বিরুদ্ধে। গত রোববার (৫ মার্চ) রাতে চাল বিক্রির সময় স্থানীয়রা তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।
অভিযুক্ত ওই নারী ইউপি সদস্যের নাম আসমা বেগম (৪৫)। তিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য।
স্থানীয় জেলে সূত্রে জানা যায়, কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নে ৬০ জন জেলের জন্য সরকারি প্রণোদনা হিসেবে ১৬০ কেজি করে মোট ৯ দশমিক ৬ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে তাঁর ওয়ার্ডের কয়েক সুবিধাভোগী জেলের পাওয়া চাল থেকে কয়েক বস্তা চাল জোরপূর্বক নিয়ে আসেন এবং সেই চাল প্রতি বস্তা ৮০০ টাকায় বিক্রি করে দেন।
এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে আসমা বেগম টাকা খেয়ে পুরাতন জেলের নাম কেটে নতুন করে প্রবাসীসহ কয়েকজনের নাম দিয়েছেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী চাপ দিলে প্রথমে তা অস্বীকার করেন, পরে তিনি চাল বিক্রির কথা স্বীকার করেন। এই ঘটনায় তদন্ত করে সঠিক বিচার চায় এলাকাবাসী।
চাল ক্রেতা কুদ্দুস সরদার বলেন, ‘আমি বাড়ি আসার সময় ইউপি সদস্য আসমা বেগম আমাকে চাল বিক্রির কথা জানান। আমি গরিব মানুষ ভ্যান চালিয়ে খাই। আমার কাছ থেকে এক বস্তা ১০০০ টাকা চাইলে আমি বলে কয়ে দুই বস্তা এক হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে কিনেছি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আসমা বেগম বলেন, ‘আমাকে তারা ইচ্ছেকৃত ভাবে এক বস্তা চাল দিয়েছে। আমি জোর করে আনিনি। আর চাল বিক্রি করিনি। আমার থেকে নিয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্ব এনায়েতনগর ইউপি চেয়ারম্যান নেয়ামুল আকন বলেন, ‘কয়েকজনের কাছ থেকে আমি চাল বিক্রির বিষয়ে জানতে পেরেছি। গরিবের চাল বিক্রি, এটা অবশ্যই আইনত দণ্ডনীয়। এ বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’
কালকিনি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সন্দ্বীপন মজুমদার বলেন, ‘জেলেদের প্রণোদনার চাল বিক্রির বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।’
এ বিষয়ে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিংকি সাহা বলেন, ‘সরকারি প্রণোদনার চাল গরিব জেলেদের জন্য দেওয়া হয়েছে। সেই চাল কেউ যদি আত্মসাৎ করে, তার বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’