‘বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০’ ধানে ভরে আছে কৃষকের ক্ষেত

Looks like you've blocked notifications!
কৃষক মতিউর রহমান। ছবি : এনটিভি

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০ ধান প্রথম বারের মতো চাষাবাদ হয়েছে। কৃষক মতিউর রহমানের ক্ষেত ভরে আছে এই ধানে। প্রথম চাষেই আশার আলো দেখছেন তিনি। পাশাপাশি আশান্বিত আরও সব কৃষক।

নতুন জাতের এই ধান আর দুই সপ্তাহের মধ্যেই কাটা শুরু হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সঠিক সময়ে গুণগত মান বজায় রেখে বিএডিসিতে বীজ সরবরাহের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষক মতিউর।

দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বড়বৈদ্যনাথপুর গ্রামে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত কৃষক মতিউর রহমান। ৫০ একর জমিতে নতুন এ জাতের ধান চাষ করেছেন তিনি।

কৃষক মতিউর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছর একই জমিতে একই ধরনের ধান আবাদ করায় বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা যায়—প্রতিবছর ওই ধানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। তাই ১৫ থেকে ১৮ বছর পর ওই ক্ষেতে রোগবালাইয়ের আক্রমণ প্রচুর বাড়ে।’

মতিউর বলেন, ‘নতুন নতুন জাতের ধান আবাদ করলে রোগ বালাই হতে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়। এ ছাড়া অল্প সময়ের মধ্যে ধান বীজ বপন ও চারা রোপণ এবং উৎপাদন কাজ হওয়ায় বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০ জাতের ধান আমাদের এ অঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করবে।’

কৃষক মতিউর রহমান বলেন, ‘এ অঞ্চলে শীত বেশি হওয়ার কারণে অন্যান্য জাতের ধান বীজ বপনের পর ঘন কুয়াশায় অনেক চারা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর নতুন এই জাতের শীত সহিষ্ণু বীজ বপনের পর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চারা রোপণ করতে পারায় একেবারে চারা নষ্ট হয় না বললেই চলে।’

মতিউর রহমান জানান, ব্রি-২৯-সহ অন্যান্য জাতের ধান উৎপাদনে মৌসুমে প্রায় পাঁচ বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। আর নতুন এ জাতের জন্য তিন বার কীটনাশক প্রয়োগ করলেই হয়। অন্যান্য জাতের তুলনায় সার প্রয়োগ করতে হচ্ছে অনেক কম। আর অন্যান্য ধানের তুলনায় দু’এক সপ্তাহ আগেই ধান ঘরে তুলতে পারায় ঝড় বৃষ্টির কবলে পড়ে ফসল নষ্টের সম্ভাবনা কম।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) দিনাজপুর কন্ট্রাক গ্রোয়ার্স এর উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান সরকার জানান, বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০ উচ্চ জিংক সমৃদ্ধ। এর চাল মাঝারি চিকন (নাজিরশাইল ও জিরা ধানের মত)। এ জাতটির ফ্লাগ লিড ভালো থাকায় ফলন ভালো হয়। অন্যান্য ধানে ফ্লাগ লিড কম থাকায় চিটা বেশি হয়। ১৪৫ থেকে ১৪৮ দিনের মধ্যে এই ধানে হেক্টর প্রতি সাত দশমিক ৮ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন সম্ভব। অন্যান্য ধানে যা প্রায় ১৬০ দিন লাগে।

মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘ধান গবেষণা কেন্দ্র- ফেনী থেকে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০ জাতের ধানের ৫০০ কেজি বীজ সংগ্রহ করে ৫০ একর জমিতে চাষাবাদ করছেন কৃষক মতিউর রহমান। বিএডিসির কর্মকর্তারা ও আমি নিজেই মাঠপর্যায়ে ধানক্ষেত পরিচর্যায় সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছি। কৃষক মতিউর রহমান আশানুরূপ ফলন পাবেন বলে আশা করছি।’