বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেন : শিক্ষামন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ছবি : এনটিভি

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে জিয়ার ভূমিকার কারণে শুধু ইতিহাসবিদই নয়, পুরো জাতির কাছে জিয়া শ্রেষ্ঠ খলনায়ক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন পাকিস্তান কাঠামোতে কখনও পূর্ব বাংলার মানুষের উন্নতি সম্ভব নয়। বাঙালি জাতির জন্য তিনি আলাদা স্বাধীন ভূখণ্ড চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু প্রথমে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা নিজের মধ্যে ধারণ করেন এবং পরবর্তীতে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেন।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র : পেছন ফিরে দেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি পরিচিত হয়েছিল মুজিবের মানুষ হিসেবে। যুদ্ধও পরিচালিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নামে। বিশ্ব মুক্তিযুদ্ধের সময় সাহায্য করেছিল মুজিবের নামে। তখন যারা বাংলাদেশকে চিনত না, তারা এ দেশকে মুজিবের দেশ হিসেবে জানত।

ডা. দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশে এমন অঞ্চল পাবেন না যেখানে বঙ্গবন্ধু যাননি। প্রত্যেক অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বঙ্গবন্ধুর। বঙ্গবন্ধু নিজের জীবনের মায়া কখনও করেননি। ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। কারণ ওই যে ইতিহাসবোধ। তিনি জানতেন পাকিস্তানিরা যুদ্ধ চাপিয়ে দেবেন। এ জন্যই তিনি ভাষণে কী করতে হবে বলে দিয়েছেন কিন্তু স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। যখনই গণহত্যা চাপিয়ে দেওয়া হলো তখনই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।

ডা. দীপু মনি বলেন, শেখ মুজিবকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের যে কাজ, তাই তাঁর হত্যার কারণ। কি পরিমাণ হিংস্রতা ছিল যে ১৮টা গুলি করতে হয়েছে একজন মানুষকে হত্যার জন্য। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। হত্যাকারীদের হিংস্রতা ঘৃণা এখনও আছে বলেই ২১ বার বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ অপরাজনীতি, রক্তশোষণ চায় না, বৈষম্য চায় না, চায় অসাম্প্রদায়িক দেশ। বঙ্গবন্ধু রাজস্বী। তিনি আমাদের হৃদয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বময় যেমন তিনি ৭১ এ ছিলেন।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত। তাঁরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে দেশকে ক্রমশ উন্নতির দিকে ধাবিত করছেন। দেশে অসাম্প্রদায়িক লোক যেমন রয়েছে, তেমনি সাম্প্রদায়িক ও স্বাধীনতাবিরোধী লোকও রয়েছে। অসাম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধুর আদর্শভিত্তিক রাজনীতির বিপরীতে রয়েছে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বিরুদ্ধাচারণ ও অপরাজনীতি। বঙ্গবন্ধু মানুষের বাইরে কিছু বুঝতেন না। তিনি ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিলেন মানুষের জন্য।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন। প্রবন্ধের ওপর মুখ্য আলোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম।