বর্ষবরণ ১৪২৯ : চেনা রূপে মঙ্গল শোভাযাত্রা

আজ বৃহস্পতিবার বাংলা নববর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আয়োজন করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রার। আজ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে সকাল ৯টায় এ শোভাযাত্রা বের হয়।
এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল—‘নির্মল করো, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে।’
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়নি। ২০২১ সালে এ শোভাযাত্রা হয়েছে সীমিত পরিসরে। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা চেনা রূপে ফিরেছে।
চিরাচরিত রীতির বাইরে এবারই প্রথম ঢাবির চারুকলা অনুষদের পরিবর্তে টিএসসি থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা ঢাবির উপাচার্যের বাসভবন এলাকা ঘুরে টিএসসিতে এসে শেষ হয়৷ চলমান মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য শোভাযাত্রায় এ পরিবর্তন আনা হয়।
শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।
এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় দেখা গেছে চারটি শিল্প কাঠামোর। এ চারটি অনুষঙ্গ হচ্ছে মাছ, টেপা পুতুল, পাখি ও ঘোড়া।

চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে ১৯৮৯ সালে প্রথম বারের মতো বের করা হয়েছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। সে বছরই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে ওই শোভাযাত্রা। প্রথম শোভাযাত্রায় ছিল পাপেট, ঘোড়া, হাতি। এর পরের বছরে চারুকলার সামনে থেকে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের হয়। ওই শোভাযাত্রায়ও নানা ধরনের শিল্পকর্মের প্রতিকৃতি স্থান পায়। এরপর থেকে এ শোভাযাত্রা বাংলা বর্ষবরণের অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে। ১৯৯৬ সাল থেকে চারুকলার এ শোভাযাত্রার নামকরণ করা হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। আর, ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি লাভ করে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।
এদিকে, ‘বাংলা নববর্ষ ১৪২৯’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দিনটি সরকারি ছুটির দিন।
এদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখী র্যালি আয়োজন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমি ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে নববর্ষ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। সব সরকারি-বেসরকারি টিভি, বাংলাদেশ বেতার, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং বাংলা নববর্ষের ওপর বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।