বানানোর এক বছরেই ব্রহ্মপুত্রে বিলীন সেতু, দোষারোপ
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের উপর বানানোর এক বছরের মধ্যেই একটি সেতু ভেঙে পড়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের বোরোখালী গ্রামের পাশে কথিত মরা খালের উপর সেতুটি গত মঙ্গলবার ভেঙে পড়ে। এতে ওই সেতু দিয়ে চলাচলকারী গফরগাঁও, হোসেনপুর ও নান্দাইল উপজেলার সাত-আটটি গ্রামের মানুষ বিপাকে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, ‘গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু, কালভার্ট নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সেতুটি নির্মিত হয়। এ নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) একে অপরকে দোষারূপ করছে।
বোরখালি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৬২) ও হোসেনপুর উপজেলার হটরআলগী গ্রামের আব্দুল খালেক (৬৩) অভিযোগ করে বলেন, সেতুর কাজ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আলিমের কাছে বারবার নালিশ করেও কোনো প্রতিকার পাননি তাঁরা। সেতুর গায়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম নেই।
সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অন্যরকম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মাহমুদুল হাসান সজীব বলেন, ‘সেতুর নিচে কোনো পাইলিং বা বল্লি ধরা ছিল না। তলদেশ থেকে পাঁচ ফুট গভীরে সেতুর বেস করা হয়েছিল। পাউবো আট ফুট নদ খনন করেছে। তাই ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে। এখানে কোনো দুর্নীতি নেই।’
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দুর্নীতি হয়েছে কি না, এখনই বলা যাচ্ছে না। নাব্যতা ফেরাতে ব্রহ্মপুত্রে সাত থেকে আট ফুট গভীর খননকাজ অব্যাহত আছে। সেতুর দুই পাশেই গভীরতা বেড়েছে বলে ধারণা। ফলে সেতুর নিচের মাটি সরে গিয়েও ভাঙতে পারে। তবে এ নিয়ে কোনো তদন্ত কমিটি হয়নি।’
পাউবো ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মুছা বলেন, ‘পানিতে সেতু করতে হলে পাউবোর অনুমতি লাগে। তারা অনুমতি নিয়েছিল? তারা কি সেতুর নিচে পাইলিং করেছিল? পাইলিং না করে ব্রিজ করা যায় না। ব্রিজ ভেঙেছে তাদের জন্য, এতে পাউবোর করণীয় কী?’
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও পাউবো আলাদা প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি তদন্ত করতে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুততম সময়ে একটি টিম তদন্ত করতে আসবে বলে শুনেছি। তদন্ত ছাড়া কোনো মন্তব্য করা যাবে না।