বান্দরবানে নিরাপত্তা বাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, গ্রাম ছেড়েছে শিশুসহ ৪০ জন

Looks like you've blocked notifications!

বান্দরবানের রুমায় দুর্গমাঞ্চলে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। দফায় দফায় দুপক্ষের গোলাগুলিতে কয়েকজন দুর্বৃত্তের মৃত্যু এবং বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যদের নির্যাতনের ভয়ে আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে শিশুসহ বম ও মারমা জনগোষ্ঠীর ৪০ জন রুমার পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নিয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের টেবিল পাহাড়ের অদূরে দুর্গামাঞ্চলে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। তবে শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় থেমে থেমে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) মধ্যে গোলাগুলিতে কয়েকজন সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর গুঞ্জন শোনা গেছে। এসময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় নিরাপত্তা বাহিনী কয়েকজন সদস্যও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় অনেকে নাম না প্রকাশের শর্তে অভিযোগ করে বলেন, সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের সদস্যরা পাড়াবাসীদের জিম্মি করে খাদ্য সংগ্রহের কারণে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপিপাড়া থেকে পাড়াপ্রধান কার্বারী সাকনাও মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নিয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লা মং মারমা বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে পাহাড়ে জুমে উৎপাদিত ফসল আদা-হলুদ এবং বিভিন্ন ফলন তুলতে পারছে না গ্রামবাসী।  পাড়াবাসীদের জিম্মি করে খাদ্য সংগ্রহের কারণে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মুয়ালপিপাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারী সাকনা অং মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। তাদের বর্তমানে মারমা এসোসিয়েশনের ক্লাবঘরে আশ্রয় দিয়েছি। পালিয়ে আসাদের মধ্যে মারমা এবং বম জনগোষ্ঠীর লোকজন রয়েছে। কয়েকদিন আগে এক পাড়াবাসীকে পিটিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়নি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বশীল এক কর্মকতা বলেন, কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। কয়েকদিন ধরেই গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। হতাহতের বিষয়সহ বিস্তারিত পরবর্তীতে জানানো হবে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। কয়েকদিন ধরেই চলমান গোলাগুলির ঘটনা এবং সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে পাড়াবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে রুমা সদরে চলে আসছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের খাওয়ার ও ক্লাবঘরে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন শিবলী বলেন, ‘পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তার বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতঙ্কে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপিপাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারী সাকনাও মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে চলে আসে। পরে সেখান থেকে তাদের রুমা সদরে নিয়ে এসে ক্লাবঘরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সেখানে খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’