মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়ায় বিএনপির মিছিলে অংশ নেওয়ায় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও ‌ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আল মামুন এ হুমকি দেন।

এই স্বেচ্ছাসেবক লীগনেতার হুমকি দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগনেতার নেতৃত্বে আরও কয়েকজন উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের চর বাউশিয়া ও পশ্চিম বাউশিয়া গ্রামে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিধমকি দেয়।

স্বেচ্ছাসেবক লীগনেতা বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমারে অহন ওসি সাব ও চেয়ারম্যান সাব পাঠাইছে হুঁশিয়ারি দেওয়ার জন্য। এরপর যদি কেউ এ গ্রাম থেকে বের হয় তার অবস্থা খারাপ অইব। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে কেউ যেন বাড়িতে না থাকে। যদি আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিং হয়, আর সেখানে যদি সামনে পড়ছে অবস্থায় সিরিয়াস কইর‌্যা ফালামু। গ্রাম থেকে বের হলে পিটানো হবে শুধু। ওসি সাহেবকে পাঠাইয়া দিমু, ধইর‌্যা নিয়া যাইব।’

উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক রাজিব হোসেন বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ইউপি সদস্য আল মামুনসহ ১০-১২ জন লোক আসে। আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। বাসায় এসে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পারি, ইউপি সদস্য মামুন আমাকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছে। আমার রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছে।

রাজিব হোসেন আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ওই দিন সকালে বিএনপির মিছিলে অংশ নিয়েছিলাম। এ কারণে সে আমার বাড়িসহ আরও চার-পাঁচটি বাড়িতে গিয়ে হুমকিধমকি দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এ নেতা। কারণ আমরা বিএনপি করি।

উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাহাদী ইসলাম বাবু বলেন, গতকাল আমরা দ্রব্যমূল্য, তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। এখন সরকারি দলের নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে।

অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আল মামুন বলেন, গতকাল বিএনপি নেতারা মহাসড়কে বাসে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তার জন্য বলেছি, যদি কেউ রাস্তায় বের হয় তাহলে মামলা তো হবেই পাশাপাশি পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে ফেলব। সরকারের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিলে সাইজ করে ফেলব। এ কথা বলেছি। সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করার তাই করব।

এ প্রসঙ্গে গজারিয়া থানার ওসি মো. রইছ উদ্দিন বলেন, এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। ভিডিও দেখিনি। কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।