বিএনপি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে : মির্জা ফখরুল

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ শুক্রবার দুপুরে ডিআরইউতে ‘অর্পণ বাংলাদেশ’ আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি

বিএনপি একটি আধুনিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ডিআরইউতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ‘অর্পণ বাংলাদেশ’ আয়োজিত সভায় এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে আমার আসতে ইচ্ছে করে না। গত ১৫ বছর ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে আমরা আসি—কষ্ট পাই, পরিবারগুলো কষ্ট পায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা তাদের জন্য খুব বেশি কিছু করতে পারিনি।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের চলমান আন্দোলন তো করার কথা ছিল না। আমরা আন্দোলন করেছি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে, যারা আমাদের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছিল, গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছিল। একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করছিল না। এ কারণে একটা যুদ্ধ হয়েছে। সেই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করেছি। একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের দুর্ভাগ্য—সেই গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য আবারও লড়াই করতে হচ্ছে, প্রাণ দিতে হচ্ছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশে এই পরিস্থিতি হবে, তা আমরা কখনও ভাবিনি। কেউ ভাবেনি৷ মাঝে মাঝে মনে হয়—এ কেমন দেশ আমরা তৈরি করলাম? যে দেশে মানুষের সম্মান থাকবে না, যে দেশে মানুষের প্রাণের কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না, বেঁচে থাকার কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না, আমি আমার ভোট দিতে পারবো না, সেখানে আমি আমার কথা বলতে পারব না, আমার প্রতি অন্যায় হবে—সে কথা বলতে পারবো না, আইনজীবীরা কোর্টে পুলিশের হাতে পিটুনি খাবেন, সেই দেশটা আমরা চিন্তা করিনি। কোনোদিন ভাবিওনি।’

সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিচারপতির কাছে গিয়েছিলেন আমাদের আইনজীবীরা। তিনি বলেছেন—যদি কিছু করার থাকে তাহলে তা করব। তিনি যদি এ কথা বলেন, তাহলে কোথায় যাব আমরা? কার কাছে যাব আমরা? এদেশের মানুষ কোথায় যাবে?’

আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেকে স্বামী হারিয়েছে, বাবা হারিয়েছে, ছেলে হারিয়েছে, ভাই হারিয়েছে ৷ মানব সভ্যতার ইতিহাস বলে আত্মত্যাগ কোনোদিন বৃথা যাবে না। তাদের রক্তের স্রোত, মায়ের অশ্রুধারা কখনও বৃথা যেতে পারে না। লড়াই শুরু করেছি, অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, একটা আধুনিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি। মানুষ অধিকার পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেছে। এই লড়াইয়ে আমরা অনেক দূরে গিয়েছি। প্রতিদিন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অতি শিগগিরই এই লড়াইয়ে জয়ী হব।’

অর্পণ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বিথীকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিতি ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

এ সময় গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা তাদের পরিজনকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।