বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে : ওবায়দুল কাদের

Looks like you've blocked notifications!
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা নির্বাচন আতঙ্ক থেকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। 

আজ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) এক বিবৃতিতে বিএনপির তীব্র সমালোচনা করে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য চিরাচরিত ভঙ্গিতে বিএনপি মিথ্যাচার করছে অভিযোগ এনে ওবায়দুল কাদের বিবৃতিতে আরও বলেন, বিএনপি কখনই নিজেদের জনগণের আয়নায় দেখতে প্রস্তুত নয়। এজন্য তারা সর্বদা জনমত যাচাইয়ের গণতান্ত্রিক পন্থা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ভয় পায়।

ওবায়দুল কাদের বিবৃতিতে আরও বলেন, অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান দেশের গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল। জিয়াউর রহমান জাতিকে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিল এবং সামরিক আইন বহাল রেখে ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ/না ভোট, ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করেছিল। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে জিয়া পত্নী বেগম খালেদা জিয়া। যার ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিপ্রায়ে খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছিল। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিকে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসিয়ে মহান জাতীয় সংসদকে কলঙ্কিত করেছিল। আবার গণআন্দোলনের মুখে বিএনপি ‘জেনারেল ক্লোজেস অ্যাক্ট-১৮৯৭’ আইনের অধীনে ২০০৭ সালে তাদের একতরফা নির্বাচন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল এখন বলেন, আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না। তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিল, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। অথচ এরপর ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিই আসন পেয়েছিল মাত্র ২৯টি। জামানত বাজেয়াপ্তের বিষয়টি এরকম রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া বিএনপির ক্ষেত্রেই মানায়। আগামীতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই বোঝা যাবে কাদের জামানত থাকবে আর কাদের থাকবে না। বিএনপির প্রতি আহ্বান থাকবে, নিজেদের সক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য তারা যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ঐতিহাসিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবে অসাম্প্রদায়িক নীতি ধারণ ও তা লালন পালন করে আসছে। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গীকার। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ। আওয়ামী লীগবিরোধী চিহ্নিত রাজনৈতিক শক্তিই এদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পরিচর্যা করে আসছে। যার গোড়াপত্তন হয়েছিল সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। 

বিএনপিই দেশের সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক উল্লেখ করে সড়ক পরিবহণমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও তার দোসররা সর্বদা সুপরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। বাংলাদেশকে তারা সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের জন্য বাস অযোগ্য করে তোলার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অকথ্য ও বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়েছিল বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী। ২০০১ সালের নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতার ওপরে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এ সন্ত্রাসের বিবরণী সুস্পষ্টভাবে উঠে আসে। তাতে দেখা যায় ২৭ জন এমপি, মন্ত্রীসহ বিএনপির প্রথম সারির নেতারা এ সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ছিল। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপরে নির্বিচারে সন্ত্রাস চালানো হয়, যেখানে মায়ের সামনে মেয়েকে ধর্ষণ করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে সমগ্র দেশে হিন্দু সম্প্রদায় এক ভয়াল বিভীষিকাময় সময় অতিবাহিত করে। আওয়ামী লীগবিরোধী মতাদর্শ থেকে এবং বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ভূলুণ্ঠিত করার জন্যই বিএনপি নীতিগতভাবে সাম্প্রদায়িকতার পথকে বেছে নিয়েছে। অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, নির্বাচনের আগে বিএনপি সর্বদা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার মাধ্যমে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করে। রাজনীতিতে বিভেদের এ খেলা বিএনপিকে আর খেলতে দেওয়া হবে না। সব অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।