বিএসএমএমইউতে ভর্তি হাজী সেলিম

Looks like you've blocked notifications!
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে হাজী সেলিম। ছবি : সংগৃহীত

দুদকের মামলায় দণ্ডিত সংসদ সদস্য হাজী সেলিমকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসসহ শারীরিক নানা জটিলতা থাকায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

আজ সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, সকাল ১০টার দিকে হাজী সেলিমকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন তাকে হাসপাতালের ৪১২ নম্বর কেবিনে রাখা হয়েছে।

হাজী সেলিমের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. আতিকুর রহমান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত। এছাড়া তার নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা রয়েছে। আজ তার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে, বিস্তারিত কাল বলা যাবে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আদালত তার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বলেছেন। সে অনুযায়ী তিনি অসুস্থ হওয়ায় তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি রাখার পরামর্শ দেন।

গতকাল রোববার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন হাজী সেলিম। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাজী সেলিমকে কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।

নথি থেকে জানা গেছে, দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টের রায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল থাকায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করে আত্মসমর্পণ করেন হাজী সেলিম। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিচারিক আদালত হাজী সেলিমকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০২০ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চুয়াল বেঞ্চ তাঁর ১০ বছরের সাজা বহাল রাখেন।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি এ রায় প্রকাশ হয়। এতে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ৯ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।

২০২০ সালের ১১ নভেম্বর এ মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেছিলেন উচ্চ আদালত। সে আদেশ অনুসারে, নথি আসার পর আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।

২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী মো. সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।

২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজি মো. সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তাঁর সাজা বাতিল করেন। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।