বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে মারধর : ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩৮ জনের নামে মামলা

Looks like you've blocked notifications!
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ঝিটকা আনন্দমোহন উচ্চবিদ্যালয়ে সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুজন অভিভাবক সদস্যকে মারধর করা হয়। ফাইল ছবি : এনটিভি

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা আনন্দমোহন উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই অভিভাবক সদস্যকে মারধরের ঘটনায় আদালতে মামলা করা হয়েছে। মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিদুল ইসলাম ও হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আদালতে গতকাল বুধবার দুপুরে মামলাটি করেন আহত অভিভাবক সদস্য মো. মহিউদ্দিন মঞ্জু। পরে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম সরোয়ার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি।

মামলায় অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান ওরফে ফিরোজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি সেলিম মোল্লা ও যুবলীগনেতা ফরিদ মোল্লা।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান প্রার্থী হন। মামলার বাদী মহিউদ্দিন খান ও সাক্ষী (স্থানীয় গোপীনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) মিজানুর রহমান অভিভাবক সদস্য ও ভোটার। তাঁরা দেওয়ান সাইদুর রহমানের সমর্থক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন এবং সংসদ সদস্য পরাজিত হবেন—ভোটারসহ সংশ্লিষ্টদের এমন ধারণা ছিল বলে দাবি করা হয়।

নির্বাচন উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ উপস্থিত হয়। ওই দুই ভোটার নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে ভোট দিতে বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপস্থিত হন। নির্বাচনে ভরাডুবি নিশ্চিত বুঝতে পেরে ভোটগ্রহণ শুরুর আগে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের সমর্থক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করে ওই দুই ভোটারকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সামনে মারধর করেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আরও বলা হয়, এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সমর্থকদের কয়েকজনের কাছ থেকে নগদ অর্থ, স্বর্ণের চেইন ও মূল্যবান মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। পরে নির্বাচনি ব্যালট পেপার ছিনতাই ও আইনশৃঙ্খলা অবনতির কারণে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় গতকাল বুধবার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী অভিভাবক সদস্য মো. মহিউদ্দিন খান। মামলাটি বিচারক তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে পিবিআইয়ের মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনার কাগজ আমার হাতে পৌঁছায়নি। পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’