বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার দুই

Looks like you've blocked notifications!
সেনাবাহিনীর নিয়োগবিজ্ঞপ্তির বিপরীতে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেয় চক্রটি। ছবি : সংগৃহীত

বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির দেওয়ার নাম করে ভুয়া প্রশ্নপত্র ও নিয়োগপত্র প্রদানের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারকচক্রের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গতকাল সোমবার রাতে দারুস সালাম থানার আনন্দনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মোশারফ হোসেন ও জিয়া উদ্দিন। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত তিনটি মুঠোফোন, সাতটি সিম কার্ড, বিভিন্ন চাকরি ভুয়া প্রশ্নপত্র, ভুয়া প্রবেশপত্র ও ভুয়া নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়।

তারেক বিন রশিদ বলেন, ‘গত ১৫ মে রাতে ভুক্তভোগী একজন বনানী থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবি সাইবারের অর্গানাইজ্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। এক পর্যায়ে তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল রাতে দারুস সালামের আনন্দনগর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।’

তারেক বিন রশিদ আরও বলেন, তারেক চক্রটি বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন পদের চাকরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো তাদের সংগ্রহে রাখে। পরবর্তীতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে সখ্য গড়ে সাধারণ চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছে নিজেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিত। বিভিন্ন পদে চাকরি পাইয়ে দিবে বলে আশ্বস্ত করতো। প্রথমে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশীর জীবন বৃত্তান্ত, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি ও অন্যান্য সকল ডকুমেন্ট ইত্যাদি সংগ্রহ করতো। পরে সেই তথ্যের মাধ্যমে একটি ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করে প্রার্থীর ইমেইলে প্রেরণ করতো। এরপর বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে ভাইভার জন্য মনোনীত হয়েছেন মর্মে জানানো হতো।

তারেক বিন রশিদ বলেন, কিছুদিন পরে ভুয়া নিবন্ধিত সিম কার্ডের মাধ্যমে অপর এক ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পুনরায় কল করে মেডিকেল ও অন্যান্য খরচ বাবদ কিছু টাকা বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে দিতে বলতো। ওই টাকা পাওয়ার পর প্রতারকচক্র একটি ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করতো। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য চাকরিপ্রত্যাশীদের “QR Code Generator” সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রার্থীর নাম ঠিকানা সম্বলিত একটি “QR Code” তৈরি করে ভুয়া নিয়োগপত্রে সেটি স্থাপন করে থাকে। এবং প্রার্থীকে বলা হয় যে, “QR Code Scanner” দিয়ে আপনার নিয়োগপত্রটি সঠিক কি না যাচাই করুন। প্রার্থী যখন তার মোবাইলের “QR Code Scanner” দিয়ে চেক করে তখন সেখানে নিজের তথ্য দেখায় এবং প্রার্থী চুক্তির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে এই নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গেলে জানতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া। এর মধ্যে প্রতারকচক্রের লোকজন তাদের ব্যবহৃত ফোনগুলো বন্ধ করে ফেলতো।

এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে বিডির কর্মকর্তা তারেক বিন রশিদ। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের পাঁচদিনের পুলিশ রিমাণ্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।