বিশ্ববিদ্যালয়ে চায়না স্টাডিজ খোলা হলে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি চীনা রাষ্ট্রদূতের

Looks like you've blocked notifications!
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেসের সাফল্য ও গণচীনের অগ্রযাত্রা বিষয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ আরও বাড়ানো দরকার এবং গণমাধ্যম এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে চায়না স্টাডিজ বিভাগ খোলা হলে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন রাষ্ট্রদূত।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেসের সাফল্য ও গণচীনের অগ্রযাত্রা বিষয়ে ঢাকার রেনেশাস হোটেলে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চায়না মিডিয়া গ্রুপ বিভিন্ন তথ্যচিত্রের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে তথ্য ও সাংস্কৃতিক আদান প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’ তিনি বাংলাদেশের গণমাধ্যমের প্রতি দুই দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধিতে চীন বিষয়ে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পরিবেশনের আহ্বান জানান। চীনের বর্তমান অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নে সমাজতান্ত্রিক আদর্শ ও কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকাও তুলে ধরেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অনলাইনে বেইজিং থেকে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন এবারের জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিনিধি, চায়না মিডিয়া গ্রুপের এশিয়া ও আফ্রিকান ভাষা প্রচার বিভাগের মহাপরিচালক আনসিয়াওইয়ু।

আনসিয়াওইয়ু বলেন, ‘সম্প্রতি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেস শেষ হয়েছে। এ সম্মেলনে চীনের পরবর্তী উন্নয়নের সার্বিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চীনকে সার্বিকভাবে সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশ হিসেবে গড়ে তোলার নতুন যাত্রা উন্মোচিত হয়েছে। চীনের নতুন যাত্রা মানে চীনের নতুন উন্নয়ন। চীনের নতুন উন্নয়ন বিশ্বের জন্য নতুন সুযোগও বটে।’

আনসিয়াওইয়ু আরও বলেন, ‘চীনা বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন আধুনিকায়ন হচ্ছে বিশাল জনসংখ্যার আধুনিকায়ন, সকল জনগণের অভিন্ন সমৃদ্ধির আধুনিকায়ন, বস্তুগত সভ্যতা ও আধ্যাত্মিক সভ্যতার মধ্যে সামঞ্জস্যপূর্ণ আধুনিকায়ন, মানুষ ও প্রকৃতির সহাবস্থানের আধুনিকায়ন ও শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে যাওয়ার আধুনিকায়ন।’

অনুষ্ঠানে ‘চীনের নতুন যাত্রা’কে তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। এ ধারাবাহিক তথ্যচিত্রে একাধিক প্রাণবন্ত গল্প বলা হয়েছে। এসব গল্প চীনের প্রাণশক্তিপূর্ণ উন্নয়নের ‘পাসওয়ার্ড’ প্রকাশ করে; চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়নের পথে চীনা জনগণের নিরন্তর চলার চিত্র তুলে ধরে।

বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে চীনের নতুনযাত্রার বৈশ্বিক তাৎপর্য আরও ভালোভাবে তুলে ধরার জন্য এই তথ্যচিত্র।  

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কাউন্সিলর ইয়ুলি ওয়ান, বাংলাদেশে চীনা শিল্প প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খ্য ছাংলিয়াং, বাংলাদেশে অবস্থিত চায়না শান্তিপূর্ণ পুনরেকত্রীকরণ ত্বরান্বিত অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সভাপতি ছাই ছুন লেই, সিনহুয়া বার্তাসংস্থার ঢাকা ব্যুরোর প্রধান লিউছুন থাও, বাংলাদেশে প্রবাসী চীনাসংস্থার মহাসচিব চেনছি হুয়া, বাংলাদেশে প্রবাসী চীনাসংস্থার যুবকমিটির সভাপতি চাংছিংপিন প্রমুখ।

বেইজিং থেকে সরাসরি যুক্ত হন চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী এবং বেইজিংয়ের বাংলা বিভাগের কর্মীরা।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগের ফেসবুকপেজ ‘সিআর আই বাংলা’র বর্তমান ফলোয়ার এক কোটি ছাড়িয়েছে। এই সাফল্যকে উদযাপন করাও এই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগের তথ্য ও লেখার মাধ্যমে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে তথ্য ও সংস্কৃতির বিনিময় আরও সুদৃঢ় হচ্ছে। দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক উন্নয়নে তা প্রভাব রাখছে। বাংলাদেশের সংবাদকর্মীরা চীনের তথ্য পাওয়ার জন্য পশ্চিমা মিডিয়ার দ্বারস্থ না হয়ে সরাসরি তথ্য পেতে পারেন।

চায়না ফোকাস, চায়না আওয়ার, দ্য গ্রেটওয়াল শো, চায়না বুলেটিন, জানা অজানা চীন, সবুজ পৃথিবী হলো সিএমজি বাংলার কয়েকটি টিভি অনুষ্ঠান, যা নিয়মিত বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হচ্ছে। এ অনুষ্ঠানে এগুলোর প্রোমো প্রচার হয়েছে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মিডিয়া হাউজ গুলোর উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।  

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কাউন্সিলর ইয়ু লি ওয়ান, বাংলাদেশে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খ্য ছাংলিয়াং, সিনহুয়া বার্তাসংস্থার ঢাকা ব্যুরোর প্রধান লিউ ছুন থাও।