বিষপানেই গোদাগাড়ীর দুই কৃষকের মৃত্যু

Looks like you've blocked notifications!
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ফাইল ছবি

রাজশাহীর গোদাগাড়ীর দুই সাঁওতাল কৃষকের মৃত্যু কীটনাশক পানেই হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার তিনি পুলিশের কাছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছেন।

গোদাগাড়ীর দুজন সাঁওতাল কৃষক অসুস্থ হন গত ২৩ মার্চ সন্ধ্যায়। তারা নিজেরাই পরিবারের সদস্যদের জানান যে, তারা বিষ খেয়েছেন। এর মধ্যে অভিনাথ মার্ডি (৩৬) নামে একজন ঐ রাতেই বাড়িতে মারা যান। আর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ মার্চ মারা যান তার চাচাতো ভাই রবি মার্ডি (২৭)। দুই কৃষকেরই বাড়ি গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের নিমঘুটু গ্রামে।

অভিনাথ ও রবির পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অনেক ঘুরেও গভীর নলকূপ থেকে সেচের পানি পাচ্ছিলেন না তারা। তাই ক্ষোভে ওই নলকূপের সামনেই দুজনে বিষ পান করেন। স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিনাথের স্ত্রী রোজিনা হেমব্রম ও রবির ভাই সুশীল মার্ডি বাদী হয়ে গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা করেছেন। গোদাগাড়ী থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন অভিযুক্ত সাখাওয়াত। এরই মধ্যে তাকে নলকূপ অপারেটরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি তদন্ত কমিটি এই ঘটনা তদন্ত করে এরই মধ্যে প্রতিবেদনও দাখিল করেছে।

তবে, মামলার তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ছিল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষা করছিল।

শনিবার এই প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মৃতের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নমুনা সংগ্রহ করেছিলাম। এরপর সেগুলো ভিসেরা রিপোর্ট প্রস্তুতের জন্য পাঠিয়েছিলাম ল্যাবে। ঐ ভিসেরা রিপোর্ট আমরা হাতে পাওয়ার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করি। ভিসেরা রিপোর্ট অনুযায়ী মৃত দুজনের শরীরে কীটনাশক বিষ পাওয়া গেছে। পরীক্ষায় আমরা অর্গানো ফসফরাস যৌগ নামে এক ধরনের কীটনাশক বিষ পাই। এই বিষপানেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহফুজুর রহমান জানান, মামলায় এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই মামলা কোন দিকে যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে। প্রতিবেদন যেহেতু হাতে এসেছে। এখন মামলায় গতি পাবে।