ব্যালটে ভোটের ১৫০ আসন আমাদের ঝুঁকিতে ফেলেছে : ইসি

Looks like you've blocked notifications!
নির্বাচন ভবন। ছবি : সংগৃহীত

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএম ও বাকি ১৫০ আসনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে, ব্যালটে ভোট হওয়া ১৫০ আসন ইসিকে রিস্কে (ঝুঁকিতে) ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর এ কথা বলেন।

সংসদ নির্বাচনের যে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশগ্রহণকারী ২৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছে ১৭টি রাজনৈতিক দল। বিপক্ষে মত দিয়েছে ১২টি রাজনৈতিক দল। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ইভিএমের পক্ষে থাকায় যন্ত্রটি ব্যবহার না করা যুক্তি সংগত হবে না বলে কমিশন মনে করে।

কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়, উভয় পক্ষের (পক্ষে-বিপক্ষে মতামত) প্রতি গুরুত্ব কমিশন অনূর্ধ্ব ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা যুক্তি সংগত মনে করে। ইভিএমগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা সদরের আসনগুলোতে অগ্রাধিকারে ব্যবহার করা হবে। অবশিষ্ট ১৫০ আসনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। 

ইভিএমের পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি দেখিয়ে কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ব্যালটে ভোট হলে কেন্দ্র দখল করে ভোটের আগে পরে ইচ্ছে মতো বাক্সে ব্যালট ভর্তি করা সম্ভব। কিন্তু, ইভিএমে এ ধরনের অন্যায় করার কোনো সুযোগ নেই।

কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নির্বাচন কমিশনাররা। তখন তারা একই কথা জানান।

‘ব্যালটে ভোট হলে কেন্দ্র দখল করে ভোটের আগে পরে ইচ্ছেমতো বাক্সে ব্যালট ভর্তি করা সম্ভব’ বলে যে কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে কমিশনের পদক্ষেপ নিয়ে এনটিভি অনলাইনের এ প্রতিবেদক প্রশ্ন করলে জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘যেহেতু আগে পরে ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই, সেহেতু আগে ভাগে এই ১৫০টি আসন আমরা সেভ করলাম। আর যে ১৫০ আসনে ব্যালটে ভোট হবে, সেখানে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব; যাতে অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে।’

মো. আলমগীর বলেন, ‘৩০০ আসনকে তো রিস্কে ফেলা যাবে না। ১৫০ আসন আমাদের (ইসি) রিস্কে ফেলেছে। ১৫০ আসনে যদি আমরা নিরাপদ থাকি, বাকি ১৫০ আসনের যেখানে আমরা রিস্কি মনে করব; সেখানে ফোর্স (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) বাড়াব।’

এ নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘আমরা পারলে ইভিএমের এ সংখ্যা আরও বাড়াতাম। কিন্তু, আমাদের সময়ের অভাব। আমাদের ট্রেনিং দেওয়ার সময় নেই। তা ছাড়া বাজেটের বিষয় আছে। সামনে যদি তিন থেকে চার বছর থাকত, তাহলে আমরা ৩০০ আসনেই ইভিএম ব্যবহার করতাম।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) বলেন, ‘আমরা অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন এবং আমরা অনেক আস্থার ঘাটতির মধ্যে আছি। আমাদের কর্মকাণ্ড দিয়ে প্রমাণ দিয়েছি, আমরা কিছুটা হলেও আগের থেকে আস্থা অর্জনে এগিয়ে গেছি। এ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে নিজেদের জবাবদিহিতা ও বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতাও আরও  বাড়বে।’

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা এমিলি বলেন, ‘পরিকল্পনা ধরেই এগিয়ে যাব আমরা। সবার সহযোগিতা পেলে অংশগ্রহণমূলক ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হব। বাস্তবভিত্তিক ও সময়ভিত্তিক এ রোডম্যাপ বাস্তবায়িত হলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।’

নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, ‘কর্মপরিবল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে অংশীজনদের সবার সহযোগিতার দরকার হবে।’