ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবারও আদালত বর্জনের ঘোষণা আইনজীবীদের
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবারও আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা। আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশেষ সাধারণ সভা শেষে এই ঘোষণা দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঞা।
সভাপতি বলেন, ‘আমরা আইনমন্ত্রীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে দুটি আদালত ছাড়া বাকি আদালতে যাওয়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু আমাদের আগের জায়গায় ফিরে আসতে হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি না আইনমন্ত্রী মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা ধরে নিয়েছি, তিনি অপারগ। তাই তিনি বলতে পারছেন না। কিন্তু আইনজীবীরা তা মানতে পারছেন না। এই কারণে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা।’
অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঞা বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, পুরাতন কাচারি এলাকায় আমাদের সম্পদ সংরক্ষণ, জেলা জজ শারমিন নিগার ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচার মো. ফারুকের অপসারণ ও নাজির মোমিনের শাস্তির দাবি মানা না হলে আইনজীবীরা তাঁদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।’
সবশেষ কর্মসূচি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত আইনজীবীরা জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১-এর আদালত বর্জন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি সাধারণ সভা করে আইনজীবীরা এ সিদ্ধান্ত নেন।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১-এ আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে আইনজীবীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সমিতির সভা করে আইনজীবীরা ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারীরা। এ অবস্থায় জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন আইনজীবীরা। ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইনজীবীদের দাবি পূরণ না হলে আবার বিশেষ সাধারণ সভা করে সব আদালত বর্জনের মতো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানানো হয়েছিল। সাধারণ সভায় উপস্থিত সকল আইজীবীদের মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ছাড়া বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অশালীন স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ আইনজীবীকে দুই দফায় তলব করেন উচ্চ আদালত। এ সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীদের সঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বৈঠকের পর দুটি আদালত বর্জনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।