ভৈরবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে শিক্ষাসহায়ক উপকরণ বিতরণ

Looks like you've blocked notifications!

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মুর্শিদ মুজীব উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৫০ দরিদ্র শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষাসহায়ক উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাজি জুলফিকার আলী কাইয়ুমের আর্থিক সহায়তায় এসব উপকরণ বিতরণ করা হয়। উপকরণের মধ্যে রয়েছে ৫০০ করে টাকা, এক জোড়া করে জুতা (ক্যাডস), জ্যামিতি বক্স, কলম, খাতা ইত্যাদি।

এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভৈরব শহরের চণ্ডীবেরের মুর্শিদ মুজীব উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাজি জুলফিকার আলী কাইয়ুমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ। মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. সিরাজ উদ্দিন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠান বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাফিউল আলম মঈন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তারেক আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওই আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক আবদুস সাদেক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পৌর যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি মো. জিল্লুর রহমান, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আলী, যুবলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আবির প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আতিক আহমেদ সৌরভ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তোমাদের পড়তে হবে, জানতে হবে। তাঁর আদর্শ, দেশপ্রেম, ত্যাগ, মহত্ত্ব বুকে ধারণ করতে হবে। তবেই তোমরা সোনার মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবে। দেশের সুনাগরিক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।’

প্রধান বক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমরা সেদিন মন্ত্রমুগ্ধের মতো শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়ে জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছি। মরব না বাঁচব, সেই তোয়াক্কা আমাদের ছিল না। আমাদের একটাই লক্ষ্য ছিল, দেশকে হানাদারদের কবল থেকে রক্ষা করতে হবে। আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করে তোমাদের মুক্ত দেশ উপহার দিয়েছি। তোমরা জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজেদের শিক্ষা-দীক্ষায় যোগ্য করে গড়ে তোলো। দেশকে বিশ্বের দরবারে সমৃদ্ধশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করো।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাফিউল আলম মঈন বলেন, ‘বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তোমরা যত জানবে, তোমাদের মধ্যে দেশপ্রেম ততই জাগ্রত হবে। দেশ ও দেশের মানুষকে তোমরা ভালোবাসতে শিখবে। নিজেকে দেশের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা পাবে। তাই পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকে জানা যায়, এমন সব বই তোমরা পড়বে।’

সভাপতির বক্তব্যে হাজি জুলফিকার আলী কাইয়ুম বলেন, “বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে ছিলাম। আর এখন তাঁর ‘সোনার মানুষ’ হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে দেশসেবায় কাজ করছি। সমাজের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। পদ বা চেয়ার নয়, আপনাদের পাশে থেকে একজন সহযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই। বিদ্যালয়টির শিক্ষাসহ সার্বিক উন্নয়নে শ্রম-ঘাম ঝরাতে চাই।’

এ সময় জুলফিকার আলী কাইয়ুম মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে তাঁর সন্তানের প্রতিদিনের হাজিরা, শ্রেণিকক্ষের পাঠপরিক্রমা, শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ, পরীক্ষার ফল ইত্যাদি পৌঁছে দেওয়ার ডিজিটাল কার্যক্রমের উদ্বোধনের ঘোষণা দেন। এখন থেকে যার যার বাড়ি গিয়ে অভিভাবকের মোবাইল চেক করতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান।