মন্দিরে কোরআন শরীফ রাখার অভিযোগে পটুয়াখালীতে গ্রেপ্তার ১

Looks like you've blocked notifications!
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় উত্তরপালপাড়া কালীমন্দিরে কোরআন শরীফ রাখার অভিযোগে মো. ইদ্রিসকে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। ছবি : এনটিভি

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় উত্তরপালপাড়া কালীমন্দিরে কোরআন শরীফ রাখার অভিযোগে মো. ইদ্রিস (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার বগা ইউনিয়নের রাজনগড়র গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপালপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ইদ্রিস বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া গ্রামের মো. লেদু মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বগা ইউনিয়নের উত্তরপালপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরে তিন দিন ধরে রাত দিন বিরামহীনভাবে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান চলছিল। গতকাল বুধবার ছিল অনুষ্ঠানের শেষ দিন। বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে অনুষ্ঠান চলাকালে ইদ্রিস নামে এক ব্যক্তি হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে অনুষ্ঠানে আসেন। একপর্যায়ে ইদ্রিস অনুষ্ঠানের মাঠে রাধাগোবিন্দ মন্দিরে ঢুকতে চাইলে বাধা দেন মন্দিরের পুরোহিত সুখরঞ্জন বৈরাগী। এরপর সেখান থেকে চলে আসেন ইদ্রিস। রাত সাড়ে ৩টার দিকে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান থেকে সঞ্জয় পাল নামে এক যুবক বাড়ি ফেরার সময় দেখতে পান রাধাগোবিন্দ মন্দিরের ৩০০ মিটার দূরের কালীমাতা মন্দির থেকে ইদ্রিস বের হচ্ছেন।

সঞ্জয় পাল বলেন, ‘কালীমাতা মন্দির থেকে ওই ব্যক্তিকে দেখে আমি তাকে প্রশ্ন করি, ‘আপনি কেন মন্দির থেকে বের হলেন। তিনি তখন বলেন, সেজদা দিতে মন্দিরে গিয়েছিলাম। আপনি মুসলিম হয়ে মন্দিরে গেলেন, এ প্রশ্ন করলেই ইদ্রিস দৌড় দেন।’

পরে সঞ্জয় চিৎকার দিলে রাধাগোন্দি মন্দিরের লোকজন এসে ইদ্রিসকে আটক করে। এরপর স্থানীয় লোকজন দেখতে পান মন্দিরে কালীমাতা প্রতিমার সামনে ঘটের ওপর একটি হাতব্যাগ, যার ভেতরে রয়েছে কোরআন শরীফ। একপর্যায়ে তিনি (ইদ্রিস) কোরআন শরীফ রাখার বিষয়টি স্বীকার করে ভুল হয়েছে বলে জানান। এরপর পুলিশে খবর দিলে ভোর ৪টার দিকে পুলিশ এসে ইদ্রিসকে আটক করে বাউফল থানায় নিয়ে যায়।

উত্তরপালপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরের সভাপতি দিলীপ পাল বলেন, ‘বাউফল হলো দেশের সম্প্রীতির উদাহরণ। এমন ঘটনা ওই ব্যক্তি কার প্ররোচনায় করেছেন, তা প্রশাসনের গভীরভাবে খতিয়ে দেখা উচিত।’

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আটক ব্যক্তির বাড়ি বরিশালের বাখেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নে। তিনি দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া এলাকার কদমতলা আবাসনে থাকেন। বুধবার বিকেলে বগা ইউনিয়নের ওই গ্রামে যান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। ইদ্রিসকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন জানানো হবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মোহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা ঘটনার মূল তথ্য বের করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছি। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। মন্দির এলাকায় পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বাউফল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অতুল চন্দ্র পাল বলেন, ‘আমরা উপজেলা নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়কে ভীত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।’