মহাসড়ক উন্নয়নে খাল ভরাট, পাঁচ হাজার হেক্টর জমি চাষে অনিশ্চয়তা

Looks like you've blocked notifications!
আশুগঞ্জে মহাসড়কের উন্নয়নকাজের জন্য ভরাট হওয়া বিএডিসির খাল। ছবি : এনটিভি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়কের উন্নয়নকাজ চলছে দুই বছর ধরে। এ জন্য মহাসড়কের পাশের খালটি ভরাট করা হয়েছে। এতে সরাইল উপজেলার সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমির বোরো চাষ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাজারও কৃষক।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া পর্যন্ত তিন হাজার ৫৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ চলছে দুই বছর ধরে। এ কাজের জন্য আশুগঞ্জ থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার অংশের খাল ভরাট হয়ে গেছে। এতে আশুগঞ্জ পলাশ-অ্যাগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের (সবুজ প্রকল্প) পানি ছাড়া সম্ভব হয়নি। প্রতি বছর জানুয়ারির শুরুতে ওই প্রকল্পের পানি ছাড়া হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানিশ্বর ইউনিয়ন, বিটঘর, বেড়তলা, নাইলা, সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া, সৈয়দটুলা, নিজসরাইল, উচারিয়াপাড়া, চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর, চুন্টা, বড়বোল্লা, নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ইসলামাবাদ, বারিউড়া, শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর ও দীঘিরপাড় এলাকার কোনো জমিতে পানি পৌঁছায়নি এ রিপোর্ট লেখার দিন পর্যন্ত। ফলে এখনও বোরো রোপণ করা সম্ভব হয়নি। জমিগুলো খালি পড়ে আছে। বীজতলার চারা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে।

চলতি বছরের বোরো আবাদের সময় শেষ হয়ে গেলেও জমিতে চারা রোপণ করতে না পারায় হাজার হাজার কৃষকের মাথায় যেন বাজ পড়েছে। তারা কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না।

সরাইল উপজেলার কৃষক বজলু মিয়া বলেন, প্রতি বছর যেখানে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আমরা আশুগঞ্জে বিএডিসির পানি পেয়ে যেতাম, সেখানে ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখেও পানি পাইনি। এ অবস্থায় আমরা কৃষকরা কী করব, তা বুঝে উঠতে পারছি না। এ বিষয়ে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আমরা চাই দ্রুত পানি পাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। অন্যথায় আমরা প্রধান ফসল উৎপাদন করতে পারব না।

এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুপুর সায়েরা ফিলিং স্টেশনের সামনে বিএডিসির খাল ভরাট করা ছিল। আমরা সে বাঁধটি কেটে দিয়েছি। এখন আশুগঞ্জে কোনো সমস্যা নেই। সরাইলে কিছু বাঁধ আছে সেটি সেখানকার ইউএনও ব্যবস্থা নেবেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম এ বিষয়ে বলেন, ইতোমধ্যে চার লেন প্রকল্প এবং আশুগঞ্জ বিএডিসি ড্রেন পরিদর্শন করেছি। এটি একটি সেনসিটিভ বিষয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যাতে পানি কৃষকদের জমিতে পৌছে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আশুগঞ্জ বিএডিসি, আশুগঞ্জের ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান, সরাইলের ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে, বিএডিসি ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং চার লেন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকসহ সবাইকে নিয়ে জরুরি সভা করে তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে এ সমস্যাটি সমাধান হবে। এ বিষয়ে কারও ন্যূনতম অবহেলা সহ্য করা হবে না।