মাদারীপুর-ঢাকা রুটে বাসভাড়া বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা
মাদারীপুর-ঢাকা রুটে বাসভাড়া ৩০০ টাকা থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৪০০ টাকা নির্ধারণ করেছে স্থানীয় বাস মালিক সমিতি। এতে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা।
যাত্রীরা বলছেন, বাস মালিকদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। দ্রুত বাসভাড়া কমানোর দাবি তাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর-ঢাকা রুটে সার্বিক পরিবহন, চন্দ্রা পরিবহন, সোনালী পরিবহন ও মাদারীপুর পরিবহন নামে চারটি পরিবহন কোম্পানি যাত্রীসেবা দিয়ে থাকে। এসব পরিবহনে কয়েকদিন আগেও মাদারীপুর-ঢাকা রুটের যাত্রীদের জন্য বাসভাড়া ছিল ৩০০ টাকা। গত দুই সপ্তাহ ধরে ভাড়া বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা করে। এতে এই রুটে যাতায়াতকারী নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি না পেলেও কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এতে যাত্রীদের যাতায়াতের ব্যয় বেড়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকাগামী যাত্রী মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মাদারীপুর একটি সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। কোনো জবাবদিহিতা নেই। তাই সবকিছুই খেয়ালখুশি মতো করা হচ্ছে। ভাড়া বাড়ানোর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ পড়েছে। আমরা চাই দ্রুত ভাড়া কমানো হোক।’
লাকী আক্তার নামে এক কলেজছাত্রী বলেন, ‘আগে ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা। এখন বাস ভাড়া বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০০ টাকা। আমাদের যাতায়াতে কষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি সরকারের দেখা উচিত।’
মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘ঢাকা-মাদারীপুর রুটে বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ১০০ টাকা। কিন্তু ভাড়া বাড়ানোর সময় যাত্রীদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে ভাড়া নির্ধারণ করা উচিত ছিল। বিষয়টি নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত।’
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মাদারীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. নুরুল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পর গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে সরকার সারাদেশের বাসভাড়া নতুন করে নির্ধারণ করে। ওই সময় মাদারীপুর রুটে বাসভাড়া নির্ধারণ করা হয় ৩৯৩ টাকা।’
নুরুল হোসেন আরও বলেন, ‘মাদারীপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ১১০ কিলোমিটার। প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ২ দশমিক ১৫ টাকা। এর সঙ্গে পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেস ওয়ের টোল যুক্ত করতে হবে। তবে মাদারীপুর রুটের বাস মালিকরা নতুন নির্ধারিত ভাড়া দুই সপ্তাহ আগে কার্যকর করেছে।’
মাদারীপুর আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার কামরুল হাসান তুষু বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বর থেকে তেলের দাম বাড়ার কারণে বাসভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এটা নতুন করে না। ৪০০ টাকা ভাড়া আগেই নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখন যেই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, সেটা সরকারের নীতিমালা মেনেই নেওয়া হয়। এখানে সিন্ডিকেটের যেই অভিযোগ আনা হচ্ছে, এটা ভিত্তিহীন।’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘ভাড়া বাড়াতে হলে সরকারের নীতিমালা মেনে ভাড়াতে হবে। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে থাকে তাহলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব।’