মায়ের কবর জিয়ারত শেষে সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রাণ গেল প্রবাসীর

Looks like you've blocked notifications!
বগুড়া সদর থানা। ছবি : এনটিভি

বগুড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ও ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক সরকার (৬৫) নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় আহত হন আরও তিন জন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল এবং কয়েকটি গুলির খোসা উদ্ধার করে।

বগুড়া সদর উপজেলার শেখরকোলা ইউনিয়নের মহিষবাথান বন্দরে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এদিকে, নিহত আব্দুর রাজ্জাকের ভাতিজার রোপন সরকারের নেতৃত্বেই একদল সন্ত্রাসী এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিহত আব্দুর রাজ্জাক সরকার মহিষবাথান গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ সরকারের ছেলে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করেন। তবে, বগুড়া শহরে ও গ্রামের বাড়িতে তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং জায়গা-জমি থাকায় বছরের অর্ধেক সময় তিনি বগুড়ায় বসবাস করেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এক মাস আগে আব্দুর রাজ্জাক সরকারের মা মারা যান। গতকাল মঙ্গলবার ঈদের দিন রাতে তিনি বগুড়া শহর থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে মহিষবাথান গ্রামে যান। সেখানে মায়ের কবর জিয়ারত শেষে মহিষবাথান বন্দরে দোকানে বসে চা পান করছিলেন তিনি। একপর্যায়ে তাঁর ভাতিজা রোপন সরকারের নেতৃত্বে আট থেকে ১০টি মোটরসাইকেলে করে একদল সন্ত্রাসী তাঁকে ঘিরে ফেলে। এরপর একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আব্দুর রাজ্জাককে কোপ দেয়। এ সময় তিনি তাঁর ব্যবহৃত লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিছুদূর দৌড়ে গিয়ে ত্রিমোহনী নামক স্থানে রাস্তায় পড়ে যান আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয়রা আরও বলছেন, রোপন সরকারেরর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা রাজ্জাক সরকারের ওপর হামলা করলে গ্রামের কিছু লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু, সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে আব্দুল হান্নান নামের একজন গুলিবিদ্ধ হলে গ্রামের লোকজন পিছু হটেন। গ্রামবাসীর ধারণা, আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারের সবাই যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় তাঁর সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে তাঁর ভাতিজা রোপনের নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল হক বলেন, ‘আব্দুল হান্নান ছাড়াও জনি ও আল আমিন নামের দুই যুবক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ জনি ও আল আমিনকে আটক দেখানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল এবং বেশ কিছু গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’