মায়ের সেবার শর্তে সাজাপ্রাপ্ত আসামির মুক্তি
বরিশালে অসুস্থ মায়ের সেবাসহ তিন শর্তে মাদক মামলায় ছয় বছরের সাজাপ্রাপ্ত যুবককে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা এই আদেশ দেন। এর আগে আসামি মেহেদি হাসান বাবুকে ছয় বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন তিনি।
শর্ত তিনটি হলো—মায়ের সেবার পাশাপাশি ১০০টি গাছ রোপণ এবং দ্বিতীয়বার এ ধরনের অপরাধে না জড়ানো।
আগামী দুই বছর আসামির সব কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করবেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা। শর্তের কোনো ব্যত্যয় ঘটলে আদালতকে জানাবেন। সেই থেকে ঘোষিত দণ্ড কার্যকর হবে।
মেহেদি হাসান বাবু নগরীর ২১ নং ওয়ার্ড এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা এবং তার গ্রামের বাড়ি মেহেন্দীগঞ্জের দাদপুর এলাকায়।
মামলার বরাত দিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজু জানান, ২০২১ সালের ২৩ অক্টোবর নগরীর ২২নং ওয়ার্ডের ঈদগাহ লেনের আফসানালয়ে বাবুর ভাড়া বাসার কক্ষ থেকে ১৫ বোতল ফেনসিডিলসহ মেহেদিকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুজিত গোমস্তা বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার অপর আসামি হলেন নগরীর করিম কুটির এলাকার নেহার মঞ্জিলের ভাড়াটিয়া রুবেল হাওলাদার।
ডিবির এসআই মঞ্জুরুল হাসান দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেন।
আইনজীবী সাজু জানান, আদালত চার্জ গঠনের সময় রুবেলকে বাদ দিয়ে একমাত্র বাবুর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন। কোনো ধরনের সাক্ষ্যগ্রহণ ছাড়া আসামি দোষ স্বীকার করায় এই রায় দেন।
প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, ‘পরিবার দণ্ডিত যুবক বাবুর ওপর নির্ভরশীল। প্রথমবারের মতো তিনি এ ধরনের অপরাধে জড়িয়েছেন। লঘুদণ্ড হিসেবে তাকে পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি আগামী দুই বছর বিচার আদালতের ভৌগোলিক এলাকা ত্যাগ করতে পারবেন না। এ সময়ের মধ্যে একই অপরাধে লিপ্ত হবেন না। ভদ্র ও ভালো ব্যবহার এবং আচার আচরণ প্রদর্শন করবেন। ঔষধি, ফলদ ও বনজ গাছের চারা রোপণ ও পরিচর্যা করবেন। নিয়মিত মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। অসুস্থ মায়ের নিয়মিত সেবা যত্ন করবেন। আইন মান্যকারী পরিশ্রমী ও সুনাগরিক হিসেবে বসবাস করবেন। ভবিষ্যতে কোনো মামলা হলে আদালতের দেওয়া সাজা ভোগ করতে হবে।’
আসামি মেহেদি হাসান বাবু জানান, আদালতের আদেশে তিনি খুশি। ভবিষ্যতে এ ধরনের আর কোনো অপরাধে জড়াবেন না। আদালতের দেওয়া নির্দেশ মেনে চলবেন।