মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী খলিল গ্রেপ্তার
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/09/28/yuddhaapraadhii.jpg)
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খলিলুর রহমানকে ঢাকার সাভার থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করো হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আজ বুধবার এ তথ্য জানান বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈনের দাবি, ‘২০১৫ সাল থেকে পলাতক খলিল গ্রেপ্তার এড়াতে নিয়মিত বাসা পরিবর্তন করতেন এবং একা অবস্থান করতেন। শুধু তাই নয়, এ সময়ে যোগাযোগের জন্য মুঠোফোনও ব্যবহার করতেন না তিনি।’
মঈন আরও দাবি করেন, ‘মাঝেমধ্যে পরিবারের সদস্যরা গোপনে খলিলের সঙ্গে দেখা করত। খলিলের ছেলেমেয়েরা তাঁর প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য নিয়মিত টাকা দিত।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় হওয়ার পর ৬৮ বছর বয়সী খলিল সাভারে গিয়ে আশ্রয় নেন। র্যাব-১৪ ও সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা মঙ্গলবার রাতে সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
খন্দকার আল মঈন জানান, ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল নেত্রকোণার এই যুদ্ধাপরাধ মামলার তদন্ত শুরু করে প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থা। ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি খলিলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে এক আসামি রমজান আলী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, অপর চার আসামি নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের মো. খলিলুর রহমান, তার ভাই মো. আজিজুর রহমান, একই থানার আলমপুর ইউনিয়নের আশক আলী এবং জানিরগাঁও ইউনিয়নের মো. শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
সে সময় চার আসামির মধ্যে খলিলুর রহমান পলাতক ছিলেন। বিচার চলাকালে কারাগারে থাকা তিন আসামিও মারা যান। ফলে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালে কেবল খলিলের রায় ঘোষণা হয়।
পলাতক খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সময় নেত্রকোণার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় ২২ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণসহ যুদ্ধাপরাধের পাঁচ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল এ মামলায়। রায়ে সবগুলো অভিযোগেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং একটি অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।
র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে মঈন বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই সে (খলিল) পলাতক ছিল। ২০১৭ সালে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে গৃহীত হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং রাজধানীর দক্ষিণখান, তুরাগ ও উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে নোয়াগাঁও এলাকার খলিলুর রহমান ১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আল-বদর বাহিনীতে যোগ দেন।
চণ্ডিগড় ইউনিয়নে আল-বদর বাহিনীর কমান্ডারও হন খলিল। স্বাধীনতার পর তিনি এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।