যানবাহন শূন্য রাজধানীতে মোড়ে মোড়ে পাহারায় পুলিশ, ছাত্রলীগ

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর ব্যস্ততম বাংলামোটর এলাকার চিত্র। ছবি : এনটিভি

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ নিয়ে রাজধানীতে কোনো মালিক সমিতি ধর্মঘটের ডাক দেয়নি। তবে রাস্তায় কোনো যান চলাচল নেই। ঢাকার সঙ্গে বন্ধ রয়েছে হাইওয়ের সকল রুটের গাড়ি চলাচল। 

সাধারণ মানুষের মনেও রয়েছে শঙ্কা। পথচারী ও যাত্রীর উপস্থিতিও হাতে গোনা। প্রতিটি সড়কের মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সরেজমিনে রাজধানীর প্রবেশপথ নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডে দেখা যায়, পুলিশ রাজধানীতে প্রবেশের বাস চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। রাজধানীর ভেতরে যাত্রাবাড়ি, শাহবাগ, গুলিস্তান, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট , মোহাম্মদপুর, শিয়া মসজিদ, কলেজগেট, আসাদ অ্যাভিনিউ, খামারবাড়ি, এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল নেই বললেই চলে। বাসের সংখ্যাও একেবারে হাতে গোনা। কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশার দেখা মিলছে।

অন্যান্য দিনের তুলনায় সড়কে পথচারী ও যাত্রী উপস্থিতিও কম। তবে রিকশায় ও পায়ে হেঁটে সমাবেশ স্থলে যোগ দিচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। 

ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে আজ শনিবার বিএনপির শেষ বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী সেখানে জড়ো হতে শুরু করেছে।

আজ সকাল ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া সমাবেশে যোগ দিতে হাজার হাজার মানুষ আগে থেকেই সমাবেশস্থলে পৌঁছে যায়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে স্লোগান দিতে দিতে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে গোলাপবাগ মাঠে আসতে দেখা যায় নেতাকর্মীদের।

বিএনপির ঢাকা মহানগর শাখার সদস্য সচিব আমিনুল হক জানান, রাতারাতি তারা মঞ্চ স্থাপন ও মাইক স্থাপনসহ অন্যান্য সব ব্যবস্থা করেছেন। তিনি বলেন, জনসভাকে সফল করতে লাখ লাখ মানুষ যোগ দেবেন।

গণভবনের উল্টো পাশে আওরঙ্গজেব রোডের প্রবেশমুখে, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের পেছনের ফটকে, শিয়া মসজিদ মোড়ে, আসাদ অ্যাভিনিউর প্রবেশমুখে, ফার্মগেট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়কে পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। ফার্মগেট এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সড়কের পাশে চেয়ার পেতে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা যাত্রীর অপেক্ষায় ছিলেন। পঞ্চাশোর্ধ্ব অটোরিকশার চালক রহিম মিয়া বলেন, ‘রাস্তাঘাট গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকেই ফাঁকা। ১ হাজার ২০০ টাকা মালিকের দৈনিক জমা, ৩০০ টাকার গ্যাস লাগে। নিজের খাওয়ার খরচ আছে৷ এই টাকা তোলার পরে আয়ের হিসাব। গতকাল কোনোমতে ২০০০ টাকা হইছিল। আজকে জমাও হবে না মনে হচ্ছে।’

ফার্মগেটের খামারবাড়ি মোড়ে কয়েকজন যাত্রীকে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রধান সড়কে কিছু রিকশা চলাচল করছে। জরুরি কাজ ছাড়া অনেকেই বাইরে বের হননি। ফলে সড়কে পথচারীর সংখ্যাও কম। বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়।

শিয়া মসজিদ এলাকায় কথা হয় পোশাক কারখানার শ্রমিক জামিল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আটটা থেকে ডিউটি। কারখানা তো ছুটি নাই। সবাই বলতেছে, আজকে ঝামেলা হতে পারে। রাস্তায় শুধু পুলিশ। কিন্তু আমাদের তো কাজে না যেয়ে উপায় নাই।’ 

রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় মহাসমাবেশ হবে। এরই মধ্য একজনের প্রাণহানি, মহাসচিবসহ চার শতাধিক নেতা-কর্মীর গ্রেপ্তার, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় তছনছ, গত তিন দিনে এমন উত্তাপ ছড়ানো অনেক ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার ঢাকায় সমাবেশের জায়গা পেয়েছে বিএনপি। এর আগে অন্তত ১২টি মাঠ নিয়ে প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছিল পুলিশ ও বিএনপি। আগের দিন এসে গোলাপবাগ মাঠের অনুমতি পায় এবং সেখানেই আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দলটির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ।