যেকোনো মূল্যে ধান সংগ্রহ অভিযান সফল করতে হবে : খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘চলতি বোরো মওসুমে যেকোনো মূল্যে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহের লক্ষমাত্রা অর্জনে সফল হতে হবে। এক্ষেত্রে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান দপ্তর থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তা কর্মচারীকে সতর্কতার সঙ্গে সচেষ্ট থাকতে হবে।’
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সারা দেশের সঙ্গে নওগাঁ জেলারও বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাজমানারা খানুমের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা যুক্ত হয়।
খাদ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে খাদ্য বিভাগের সব কর্মকর্তা, কর্মচারী এমনকি খাদ্যগুদামে কর্তব্যরত শ্রমিকদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে কৃষকরা যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়। কৃষকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে এবং সরাসরি কৃষকদের কাছে থেকেই ধান সংগ্রহ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এক্ষেত্রে কোনো সিন্ডিকেট সহ্য করা হবে না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সংগৃহীত ধানের গুণগত মান একশ ভাগ নিশ্চিত করতে হবে। ধানের গুণগত মানের ক্ষেত্রে কোনো আপোস করা হবে না।’
মন্ত্রী মিলমালিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সময়মতো চুক্তি সম্পাদন করবেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের বিপরীতে দেওয়া চাহিদাপত্র অনুযায়ী ধান গুদামে সরবরাহ করতে হবে।’
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র বলেন, ‘সরকার কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের নায্যমূল্য নিশ্চিত করাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। কারণ এ সরকার বিশ্বাস করে যে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কাজেই প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় ও নির্দেশে কৃষকদের সুযোগ সুবিধার মধ্যে কৃষি প্রণোদনা এবং কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি রয়েছে। এছাড়া অন্য কর্মসূচির আওতায় সারা দেশে লাখ লাখ কৃষকদের মধ্যে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ করা হচ্ছে।’
নওগাঁ জেলায় চলতি মওসুমে মোট ২৫ হাজার ৬৯৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বোরো ধান সংগ্রহ ২০২১ কার্যক্রম শুরু হলো। এর মধ্যে সদর উপজেলায় দুই হাজার ৪৬২ মেট্রিক টন, আত্রাইয়ে দুই হাজার ৫১৮ মেট্রিক টন, রানীনগরে দুই হাজার ৫৭৩ মেট্রিক টন, মহাদেবপুরে তিন হাজার ৮৮৩ মেট্রিক টন, পত্নীতলায় দুই হাজার ৬৮৯ মেট্রিক টন, ধামইরহাটে দুই হাজার ৫৪৬ মেট্রিক টন, বদলগাছীতে এক হাজার ৬০৮ মেট্রিক টন, সাপাহারে ৭১৬ মেট্রিক টন, পোরশায় দুই হাজার ১০২ মেট্রিক টন, মান্দায় দুই হাজার ৭২৮ মেট্রিক টন এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় দুই হাজার ৮৭২ মেট্রিক টন।
জেলার নওগাঁ সদর, মহাদেবপুর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে এবং অন্যান্য উপজেলায় সাধারণ পদ্ধতিতে ধান সংগ্রহ করা হবে বলে জেলা খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বোরো মওসুমে জেলায় ১১ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৫ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদিত হবে বলে কৃষি বিভাগ তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
এ উপলক্ষে নওগাঁ স্থানীয় খাদ্য গুদামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. হারুন-অর-রশিদ। এ সময় পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া, রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুখ হোসেন পাটোয়ারী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শামসুল ওয়াদুদ, জেলা চাউল কল মালিক গ্রুপের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদ ফরহাদ হোসেন চকদার বক্তব্য দেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় চাউল কল মালিক গ্রুপের নেতারা, ব্যবসায়ীরা, খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।