‘যৌতুকে’ নিভে গেল জিনিয়ার জীবন প্রদীপ

Looks like you've blocked notifications!
সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি : এনটিভি

প্রায় এক বছর আগে আর দশ জন সাধারণ নারীর মতো অনেক স্বপ্ন নিয়ে শুরু করেন সংসার। কিন্তু, বছর না পেরোতেই হতে হলো লাশ। সাভারে যৌতুকের দাবিতে মারধরের পর গলা টিপে জিনিয়া আক্তার জেরিন নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জিনিয়ার স্বামীকে অভিযুক্ত করে তাঁর বাবা সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

নিহত জিনিয়া আক্তার মানিকগঞ্জের দেরগ্রাম এলাকার জামাল উদ্দিনের মেয়ে। তাঁর স্বামী অভিযুক্ত শাওন ইসলাম (২৩) সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মৈস্তাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে শাওন ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় জিনিয়ার। এরপর থেকেই ছেলের চাকরির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল শাওনের পরিবার। জিনিয়া তাঁর বাবার বাড়ি থেকে টাকা চাইতে অপারগতা জানানোয় তাঁকে মারধর করতেন শাওন। এ নিয়ে সালিশ-মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বাদী। এরপর জিনিয়ার বাবা জামাল উদ্দিনের কাছ থেকে তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি লিখে দেওয়ার দাবি জানান অভিযুক্ত শাওন। অন্যথায়, মেয়েকে ডিভোর্স দেওয়ার হুমকি দেন।

এক পর্যায়ে রাতে শাওন ফোন করে জামাল উদ্দিনকে জানান, তাঁর মেয়ে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে জামাল জানতে পারেন, তিনি পৌঁছানোর আগেই তাঁর মেয়ে মারা গেছে। তাই, সুরতহাল শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরে সেখানে গিয়ে মেয়ের মরদেহ দেখতে পান জামাল উদ্দিন।

অভিযোগসূত্রে আরও জানা যায়, বাদী জামাল উদ্দিনের ধারণা, গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে যৌতুকের দাবিতে মারধরের পর গলা টিপে তাঁর মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই মরদেহ সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাওনের সঙ্গে তাঁর পরিবারও জড়িত থাকতে পারে। এর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফজল হক বলেন, ‘ঘটনাটির বিষয়ে প্রথমে বলা হয়েছিল, এটি আত্মহত্যা। পরে সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ভুক্তভোগীর পরিবার হত্যার অভিযোগ করেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’