বিএনপির সমাবেশ

রংপুরের পথে নীলফামারীর জনস্রোত

Looks like you've blocked notifications!
রংপুর বিভাগে পরিবহণ ধর্মঘট, তাই যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে রেলপথ ব্যবহার করছেন ডোমার ও চিলাহাটির বিএনপির নেতাকর্মীরা। ছবি : এনটিভি

বিএনপির রংপুরের বিভাগীয় গণসমাবেশে নীলফামারী থেকে অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আজ শুক্রবার সকাল থেকেই নেতাকর্মীদের রংপুরে যাওয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দাবি, সরকারের ইন্ধনে বাস ধর্মঘট বলে  মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, সিএনজি, মাইক্রোবাসযোগে সমাবেশের উদ্দেশে নেতাকর্মীরা যাবেন আগামীকাল পর্যন্ত। এ ছাড়া যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে রেলপথকে ব্যবহার করছেন ডোমার ও চিলাহাটির নেতাকর্মীরা। তারাও ট্রেনযোগে সকাল থেকে রংপুরে যাওয়া শুরু করেছে। আজ ৫০০ মোটরসাইকেল গেছে রংপুরে। এ ছাড়া ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগেও গেছে অনেকে।

নেতারা বলছেন, রংপুরের গণসমাবেশ সফল করতে সম্প্রতি নীলফামারী জেলায় প্রস্তুতি সভা করে জেলা বিএনপি। যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপরসনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। ওই সভায় শঙ্কা প্রকাশ করা হয়, গণসমাবেশ ঘিরে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। সেটি মাথায় রেখেই গণসমাবেশ সফল করারও উদ্যোগ নেয় দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক জামিয়ার রহমান বলেন, ‘আমরা বিকেলে ৫০টি মোটরসাইকেল নিয়ে গণসমাবেশের উদ্দেশে রওনা হই। রংপুরে পরিচিতজনের বাড়িতে মোটরসাইকেল রেখে সমাবেশ প্রাঙ্গণে যোগ দেব।’ তিনি বলেন, ‘বাস বন্ধ। এজন্য রংপুরে যেতে সাধারণ মানুষকে কষ্ট পেতে হচ্ছে। তারপরও মানুষের স্রোত এখন রংপুরের দিকে। যেটি রংপুরের সড়কগুলো দেখলেই বোঝা যায়।’

জাতীয়তাবাদী যুবদল নীলফামারী পৌর কমিটির সদস্য সচিব আবু সাইদ বাবু বলেন, ‘আমাদের অন্তত দেড় হাজার নেতাকর্মী যাবে রংপুরের গণসমাবেশে। সেটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ সকাল থেকে বিভিন্নভাবে যাওয়াও শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। আগামীকাল পর্যন্ত যাওয়া অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘যুবদলের জেলা, উপজেলা, পৌর, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।’

রংপুরে গণসমাবেশস্থলে থাকা বিভাগীয় মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা রঞ্জু জানান, সমাবেশ আগামীকাল শনিবার। আজ সকাল থেকে দলে দলে মানুষ আসতে শুরু করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেও এসেছে। পরিবহণ ধর্মঘট দেওয়া হলেও মানুষের বাঁধভাঙ্গা স্রোত রংপুরে মিলন মেলায় পরিণত হচ্ছে।

গোলাম মোস্তফা রঞ্জু  বলেন, ‘এখানে শুধু বিএনপির গণসমাবেশ হচ্ছে না, সাধারণ মানুষের সভা হচ্ছে। মানুষ এই সরকারকে আর চাচ্ছে না। সেটি জানান দিতে গণসমাবেশে অংশ নিচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি রংপুরের এই গণসমাবেশ ইতিহাস সৃষ্টি করবে।’

আজ বিকেলে আন্তনগর তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনে সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম কালু ও সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমনের নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মী রংপুরের উদ্দেশে রওনা হন।

ডোমার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমন বলেন, ‘কোনো বাস বা মাইক্রোবাস আমাদের ভাড়া দিচ্ছে না। তারপরও গণসমাবেশ সফল করার লক্ষে দুই হাজার নেতাকর্মী নিয়ে ট্রেনযোগে রংপুর যাচ্ছি।’

উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম কালু বলেন, ‘আমরা গণসমাবেশের একদিন আগেই রংপুর যাচ্ছি। সরকার যতই বাধা দিক, এই গণসমাবেশ স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশে পরিণত হবে।’

জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার বলেন, ‘রংপুরের গণসমাবেশে নীলফামারীর অন্তত ১০ হাজার মানুষ অংশ নেবে। এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। আজ ৫০০ মোটর সাইকেলের বহর গেছে রংপুরে। দলে দলে যাচ্ছে। সরকারের ইন্ধনে বাস ধর্মঘট দিয়ে সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করা হলেও জনস্রোত থামাতে পারেনি। মানুষ এই সরকারকে আর চায় না, সে কারণে বাধা সত্ত্বেও গণসমাবেশগুলোতে অংশ নিয়ে সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছে।’