রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশে যে ৮ শর্ত পুলিশের

Looks like you've blocked notifications!
রাজশাহীতে রাজপাড়া থানার মাদ্রাসা ময়দানে আট শর্তে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। ছবি : এনটিভি

রাজশাহীতে বিএনপিকে ৮ শর্ত গণসমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে গণসমাবেশের এ অনুমতি দেওয়া হয়। ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে (হাজি মুহম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ) বিএনপিকে বিভাগীয় গণসমাবেশ করার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। 

পুলিশের অনুমতিপত্রে বলা হয়েছে, ‘আগামী ৩ ডিসেম্বর (শনিবার) রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজন ও মাইক ব্যবহারের অনুমতি আছে। এ বিষয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজপাড়া থানার মাদ্রাসা ময়দানে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজন করা যাবে। তবে আটটি শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেওয়া হলো।

আট শর্তের প্রথম শর্তে বলা হয়েছে, মাদ্রাসা ময়দান চত্বরের মধ্যেই সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সমাবেশস্থলের আশপাশসহ কোনো অবস্থাতেই সমবেত হওয়া এবং যান ও জন চলাচলে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। নিরাপত্তার জন্য সমাবেশে আগতদের চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে এবং নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।

দ্বিতীয় শর্ত হচ্ছে- দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সামাজিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ, রাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কার্যকলাপ এবং উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান ও প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।

তৃতীয় শর্তে বলা হয়েছে, সমাবেশে আসা-যাওয়ার পথে শোভাযাত্রা ও মিছিল করাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এমন কর্মকাণ্ড করা যাবে না। ব্যানার-ফেস্টুন ও পতাকাতে কোনো লাঠিসোটা ও রড ব্যবহার করা যাবে না। ব্যানার-ফেস্টুন ইত্যাদির ব্যবহার সীমিত করতে হবে।

চতুর্থ শর্ত হচ্ছে—আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে, এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন; বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।

পঞ্চম শর্তে বলা হয়েছে, মঞ্চ তৈরির সঙ্গে যারা জড়িত (আইডি কার্ডসহ) তারা ব্যতীত অন্য কেউ আগামী ৩ ডিসেম্বর সমাবেশ শুরুর আগে সমাবেশস্থলে প্রবেশ কিংবা অবস্থান করতে পারবে না। সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম ওই দিন ২টার সময় শুরু করে বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। আগত নেতাকর্মীরা যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে দায়িত্বশীল নেতাদের বা আয়োজকদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে।

ষষ্ঠ শর্ত হচ্ছে—নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। সমাবেশস্থলের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেক্টর, মাইক, সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা যাবে না। সমাবেশস্থলে ইন্টারনেট সংযোগ, ব্রডব্যান্ড সংযোগ ও রাউটার ব্যবহার করা যাবে না।

সপ্তম শর্তে বলা হয়েছে— সমাবেশে আগতদের বহনকারী যানবাহন শহরের ভেতরে প্রবেশ করানো যাবে না। রাস্তা বন্ধ করে গণসমাবেশের কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকতে হবে। পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে। মূল সড়কে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না।

আট নম্বর শর্তে বলা হয়েছে—এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়। স্থান ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আলাদা অনুমোদন নিতে হবে। জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকেই অনুমতির আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।

অনুমতিপত্রে আরও বলা হয়েছে, উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত অনুমতিপত্রটি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুকে আজ দুপুরে দেওয়া হয়েছে।