রাতে বিদ্যালয়ে ইয়াবা সেবন করেন প্রধান শিক্ষক!
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ আলমকে ইয়াবা সেবনের সময় হাতেনাতে আটক করেছে এলাকাবাসী। কয়েকদিন ধরে রাতে বিদ্যালয়ে এসে নিজ কক্ষে তিনি ইয়াবা সেবন করে আসছেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি বুঝতে পেরে গতকাল সোমবার রাতে ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামসহ হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসী। পরে বিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার শর্তে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ওই শিক্ষককে ছেড়ে দেয়।
এদিকে ঘটনার পরপর ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদিসহ মাসুদ আলমের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, জরুরি সভা করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েকদিন ধরে মোটরসাইকেলে এসে প্রধান শিক্ষক মাসুদ রাতে বিদ্যালয়ের নিজ কক্ষে সময় কাটান। বিষয়টি স্থানীয়রা আঁচ করতে পারেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাতে তারা আগে থেকেই ওত পেতে ছিলেন। রাত প্রায় ৮টার দিকে মাসুদ বিদ্যালয়ে এসে কক্ষে প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে এলাকাবাসী কক্ষে ঢুকে হাতেনাতে ইয়াবা সেবনকালে শিক্ষককে আটক করে। সেখান থেকে প্লাস্টিকের বোতলসহ ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি দেখা যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হয়। এ সময় মাসুদ সংশোধন হবেন এবং এ বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুইজন অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষক সম্প্রতি নেশায় জড়িয়ে অসংলগ্ন হয়ে পড়েছেন। এ ধরনের শিক্ষকের কাছে ভালো কিছু আশা করা যায় না।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ইয়াবা সেবনের ঘটনাটি কয়েকজন আমাকে জানিয়েছেন। সম্মান রক্ষার্থে আপাতত তাকে ছেড়ে দিতে বলেছি। পরিচালনা কমিটির বৈঠকে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বক্তব্য জানতে প্রধান শিক্ষক মাসুদ আলমকে ফোন করা হলে তার স্ত্রী পরিচয় দেওয়া এক নারী রিসিভ করেন। তিনি জানান, মাসুদ ফোন রেখে ঘর থেকে বের হয়ে গেছেন। পরবর্তীতে চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মহসিন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এর আগেই লোকজন শিক্ষককে ছেড়ে দিয়েছে।’
উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমরান হোসেন নান্নু বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে বিস্তারিত জানা নেই।’
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল কুমার ঘোষ বলেন, ‘ঘটনাটি আমাকে কেউ জানায়নি। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’