রাবি অধ্যাপক তাহের হত্যা : আজ ফের আসামিদের রিভিউ শুনানি

Looks like you've blocked notifications!
হাইকোর্ট। এনটিভির ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আসামিদের করা আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে।

আজ রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের আট বিচারপতির বেঞ্চে দুটি রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাবির কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি নিহত অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয় জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। এই হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চার জনকে ফাঁসির আদেশ ও দুই জনকে খালাস দেন। দণ্ডিতরা হলেন, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, নিহত অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের সম্বন্ধি আব্দুস সালাম। খালাসপ্রাপ্ত চার্জশিটভুক্ত দুই আসামি হলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সী।

২০০৮ সালে বিচারিক আদালতের রায়ের পর নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ) হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন হাইকোর্ট।

ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা দুই আসামি হলেন- একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম। ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া দুই আসামি হলেন- মো. জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের সম্বন্ধি আব্দুস সালাম। এরপর আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। পাশাপাশি যাবজ্জীবন দণ্ডিত দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

শুনানি শেষে গত বছরের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় বহাল রাখেন। ১৫ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। এরপর আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ‘আসামিদের স্বীকারোক্তিগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, হত্যার এই ষড়যন্ত্রে মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনই মুখ্য এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। আমাদের এটা বলতে দ্বিধা নেই যে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন শুধুমাত্র প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি পেতেই ড. তাহেরকে এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেন। তার ধারণা ছিল, ড. তাহের বেঁচে থাকলে অধ্যাপক হিসেবে তার পদোন্নতি পাওয়া সম্ভব না। আমাদের এও বলতে দ্বিধা নেই যে, আপিলকারী জাহাঙ্গীর আলম এবং আবেদনকারী আব্দুস সালাম ও নাজমুল আর্থিক সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার জন্য অধ্যাপক তাহের আহমেদকে হত্যার জন্য ড. মহিউদ্দিনের প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন।’