লকডাউনের ঘোষণায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজারে ফেরিতে মানুষের ঢল
আগামী সোমবার থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন—সরকারের এমন ঘোষণার পর শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের ফেরিতে মানুষের ঢল নেমেছে।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে নৌরুটের ফেরিগুলোতে ঢাকা ও দক্ষিণবঙ্গগামী উভয়মুখী যাত্রীদের পারাপার করতে দেখা গেলেও আজ শনিবার সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন। একইসঙ্গে পারাপার হচ্ছে পণ্যবাহী ও জরুরি যানবাহন।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আসা আব্দুস সালাম জানান, এক হাজার টাকা দিয়ে তাঁরা চার জন সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ঘাট এলাকায় এসেছেন। প্রতিটি চেকপোস্টে তাঁদের থামতে হয়েছে।
শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা মাদারীপুরের যাত্রী সালমা জানান, বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ঢাকার মিরপুর যেতে হয়েছিল তাঁদের। জনপ্রতি ৬০০ টাকার ভাড়া গুণতে হয়েছে শিমুলিয়া ঘাট পর্যন্ত। এখন ফেরিতে পার হবেন। বিয়ের আনন্দ তো দূরের কথা, ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাঁদের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ জানান, নৌরুটে বর্তমানে ১৪টি ফেরি সচল রয়েছে। লকডাউনের আওতামুক্ত গাড়ি পারাপারের কথা থাকলেও যাত্রীরা ঘাটে আসছে।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ জাকির হোসেন বলেন, ‘শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশ মুখে চেকপোস্ট আজও রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব যাত্রীদের ঘাটে আসা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। লকডাউনের নির্দেশনা মানার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু, যাত্রীরা বিভিন্নভাবে ঘাটে এসে উপস্থিত হচ্ছেন। মূলত আগামী সোমবার থেকে সাত দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা শুনে যাত্রীদের আগমন বেড়েছে। বাংলাবাজারঘাট থেকেও ফেরিতে করে শিমুলিয়া ঘাটে আসছে অনেক যাত্রী।’
মাওয়া নৌপুলিশের পরিদর্শক সিরাজুল কবির বলেন, ‘ঘাটে যাত্রীরা হেঁটে আসছেন। তবে যে ভিড় সৃষ্টি হচ্ছে, তা স্বল্প সময়ের জন্য। ১৪টি ফেরি জরুরি সেবার যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স পারাপারের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে, মানবিকতা বিবেচনায় যাত্রী ও ব্যক্তিগত যানবাহনও পারাপার করা হচ্ছে। যদিও যাত্রীর ভিড় ক্ষণস্থায়ী। ফেরি যখন ঘাটে নোঙর করে, তখন যাত্রী নামার ভিড় হয়। আর যখন ফেরি ছেড়ে যায়, তখন যাত্রী ওঠার ভিড়। তা ছাড়া ফেরি ঘাট প্রায় ফাঁকা। বর্তমানে ছোট-বড় গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্সসহ দেড় শতাধিক যানবাহন রয়েছে পারাপারের অপেক্ষায়।’
মুন্সীগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব জানান, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে ট্রাফিক ও জেলা পুলিশের একাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কোনো যানবাহন ঘাটে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। তা ছাড়া প্রতিটি উপজেলাসহ জেলা সদরে ছয়টি চেকপোস্ট রয়েছে। জরুরি সেবার দোকান ছাড়া সব ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। যারা খোলা রাখছেন, তাঁদের বুঝিয়ে ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার থেকে জেলায় কঠোরভাবে লকডাউন পালনে কার্যকর বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।